October 13, 2024, 1:07 am
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ দেশে এবার মরিচের চরা বাজার হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাঁসি ফুটেছে। বগুাড়ায় উৎপাদন হয়েছে অন্তত ৭০০ কোটি টাকার মরিচ। বিগত সময়গুলোকে হার মানিয়ে এবার সর্বোচ্চ মুনফা ঘরে তুলেছে কৃষকেরা। এর মধ্যে শুধু সারিয়াকান্দি উপজেলায় মরিচের ফলন হয়েছে ৫২৫ কোটি টাকার। মরিচ ও লাল মরিচের জন্য বিক্ষাত বগুড়া। প্রতিবছর উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে মরিচের অধিকাংশ চাহিদা পূরন করে থাকে বগুড়ার মরিচ। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭,২৫০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৫,৬৫০ হেক্টর। প্রতি হেক্টর জমিতে গরে ১৩ মেট্রিকটন ধরে অর্জিত ফলন ৭৩,৪৫০ মেট্রিক টন। কাঁচা মরিচের আওতায় জমির পরিমান ২,৯৪০ হেক্টর ও উৎপাদন ৩৯,৬৯০ মেট্রিক টন। শুকনা মরিচের আওতায় জমির পরিমান ৩,৫৮৯ হেক্টর ও উৎপাদন ১০,২২৮ মেট্রিক টন। কাঁচা মরিচের মোট বিক্রয় মূল্য প্রায় ৪৭৭ কোটি টাকা ও শুকনো মরিচের বিক্রয় মূল্য প্রায় ৪১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬৮৭ কোটি টাকার মরিচ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে এই জেলায়। গত বছরের চেয়ে মরিচের আবাদ ও উৎপাদন কম হলেও বাজার মূল্য বেশি থাকায় রপ্তানিতে আয় বেরেছে কৃষকদের। এতে করে মরিচের প্রতি পূনরায় আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। আগামি বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জিত বেশি হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। জেলায় উল্লেখযোগ্যহারে মরিচ উৎপাদন হয়ে থাকে সারিয়াকান্দি ও সোনাতলার যমুনা চরে। এই দুই উপজেলার মধ্যে সারিয়াকান্দিতে বেশি আবাদ হয়। কারন প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুরে সারিয়াকান্দির যমুনা চর। এই চরে এবার মরিচের আবাদ হয়েছে ৩,১৭০ হেক্টর জমিতে। আর সোনাতলায় আবাদ হয়েছে ১০১০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলাগুলোর মধ্যে সদরে ৭০ হেক্টর, শাহাজানপুরে ২১৫, শেরপুরে ১৫০, ধুনটে ৩০০, শিবগঞ্জে ২৫০, কাহালুতে ৫০, দুপচাঁচিয়ায় ৪৫, আদমদিঘীতে ৩৫ ও নন্দীগ্রামে চাষ হয়েছে ২৫ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী শুধু সারিয়াকান্দির যমুনা চরে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগ বলছেন মরিচ একটি অত্যান্ত অর্থকরি ফসল এই ফসল থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে যমুনা চরের বানভাষী মানুষগুলো দুর্যোগকালীন সময়ে মোকাবেলা করে থাকে। মরিচ চাষের সময়টুকুতে তেমন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকেনা তাই একটু যত্নের মাধ্যমে ভালো ফসল ফলাতে পারলেই বেশ ভালো মুনফা ঘরে তুলতে পারবেন তার।এখন জমি থেকে কাচা মরিচ উঠানো প্রায় শেষ, লাল মরিচ আছে অল্প কিছু জমিতে। চলছে লাল মরিচ সংগ্রহ ও বাজার জাতকরনের প্রক্রিয়া।চরাঞ্চলে গেলেই দেখা মিলবে মরিচ গাছে সবুজ পাতা নেই, আছে শুরু লাল মরিচ, অর্থাৎ লাল মরিচের কারনে জমিটিই লাল হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও সাদা বালির উপর মরিচ শুকাতে দেয়ায় দুর থেকে দেখে মনে হবে লাল গালিচায় ঢেকে দেয়া হয়েছে চরের এই সাদা বালি। শুকাতে দেয়া এসব মরিচ হিমাগার অথবা বাজারের উপযোগী করে তুলতে কাজ করছে নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। তারা কোয়ালিটি ভেদে কয়েকটি অংশে এসব মরিচ বাছাই করছে। শুকানো শেষে এসব মরিচ বাজারে অথবা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রয়, গোডাউনে সংগ্রহ আবার কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা হিমাগারেও রেখে দেয়। তবে এবার বাজারে লাল মরিচের চাহিদা ও দাম প্রায় দ্বিগুন হওয়ায় জমি অথবা আরৎ থেকেই বেশি বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি লাল মরিচের দাম ১৪০-১৭০ টাকা পর্যন্ত। বিগত দিনে অর্থাৎ গত বছরেও লাল মরিচ বিক্রয় হয়েছে ৫০-৭০ টাকা পর্যন্ত। জমি থেকে এসব লার মরিচ সংগ্রহ করে শুকানো হলে ৪-৫ কেজি মরিচ শুকিয়ে ১ কেজি হয়। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি শুকনো মরিচ ৪০০ থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে।