April 24, 2024, 10:18 am

মরক্কোর সাফল্যের রহস্য ১৪ ‘ইউরোপীয়’

যমুনা নিউজ বিডিঃ স্পেনের বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে টাইব্রেকার ঠেকানো গোলকিপার ইয়াসিন বুনুর জন্ম কানাডায়। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা, ফুটবলার হয়ে ওঠা। এবারের বিশ্বকাপে তিনি গোল খেয়েছেন মাত্র একটি। স্পেনের মাদ্রিদে জন্ম নেওয়া পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমি, দলের বড় তারকাই। নেদারল্যান্ডসে জন্ম নিয়ে মরক্কান জাতীয় দলে খেলতে এসেছেন সোফিয়ান আমরাবাত। তিনি মধ্যমাঠে দলের প্রাণশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। লেফট উইংয়ের ফ্রান্সে জন্ম নেওয়া সোফিফান বুফাল দলের আক্রমণের অন্যতম চালিকা শক্তি। আরেক তারকা হাকিম জিয়েশও নেদারল্যান্ডসে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। চেলসির এই তারকার নেদারল্যান্ডসের কমলা জার্সি পরারই কথা ছিল। সাবেক কোচ রোনাল্ড কোমানের সঙ্গে আলোচনাও চালিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি বেছে নেন মাতৃভূমির লাল-সবুজ জার্সি। সোফিফান আমরাবাতের গল্পটাও একই। তাঁরও খেলার কথা ছিল নেদারল্যান্ডস দলেই।

মরক্কান ফুটবলে বড় তারকার সংখ্যা কম নয়। এজাকি বাদু, মেহেদী বেনাতিয়া, আবদেররহমান মাহজুব, সালাহদিন বশির, আবদেল মজিদ দোলমি, আজিজ বৌদার বালা, মোহাম্মদ তিমোনি, আহমেদ ফারাজ, মুস্তাফা হাজি, নুরুদিন নেইবাৎ—কিংবদন্তির সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কিন্তু মরক্কান ফুটবল ফেডারেশন চেয়েছে, যেহেতু ইউরোপে মরক্কান প্রবাসীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ, তাই সেখান থেকেই প্রতিভা অন্বেষণ করে জাতীয় দলকে শক্তিশালী করা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যেমন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইতালিতে প্রতিভা অন্বেষণের বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে সফল তাঁরা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জন্ম নেওয়া, সেখানেই ফুটবলার হিসেবে গড়ে ওঠা এবং ইউরোপের শীর্ষ লিগে খেলা প্রতিভাবান ফুটবলারদের মরক্কোর জার্সির প্রতি আকৃষ্ট করতে পারাটাও তাঁদের বড় সাফল্য। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপে ইউরোপে জন্ম নেওয়া খেলোয়াড়দের প্রথম স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করেছিল মরক্কান দল।

ইউরোপে মরক্কোর বিরাট প্রবাসী জনগোষ্ঠী আছে—আগেই বলা হয়েছে। কিন্তু এখানে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মরক্কো নিজেদের ইউরোপপ্রবাসীদের নিয়ে যে বাড়তি সুবিধা পায় সেটি হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগ ইউরোপপ্রবাসীর সঙ্গেই দেশের গভীর যোগাযোগ আছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে মরক্কোর শতকরা ৬১ শতাংশ প্রবাসী, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫, তাঁরা প্রায় প্রতিবছর দেশে বেড়াতে আসেন।

ইউরোপের কোনো ফুটবল-শক্তির নজরে থাকার পরেও মরক্কোর হয়ে খেলার জন্য কেন আগ্রহী হচ্ছেন প্রবাসী ফুটবলাররা। এ ব্যাপারে সোফিয়ান আমরাবাতের মন্তব্য, ‘আমার বাবা-মা মরক্কান। আমি যখন মরক্কোতে বেড়াতে যেতাম, তখন খুব আবেগময় হয়ে পড়তাম। নেদারল্যান্ডসে থাকলেও মরক্কোকে একান্ত নিজের বলেই মনে হতো। নেদারল্যান্ডসও আমার নিজের দেশ, কিন্তু মরক্কো সত্যিই বিশেষ।’

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD