April 26, 2024, 4:23 am

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অসময়ে তরমুজ চাষে লাভবান কৃষকরা

সাতক্ষিরা প্রতিনিধিঃ রসাল ফল তরমুজের কথা শুনলে কার না জিহ্বায় জল চলে আসে। আর এই রসাল ফল এবার মৌসুম ভিত্তিক চাষ না হয়ে অফসিজেন চাষ করে কৃষকরা উপকূলীয় এলাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান ও হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগরে অসময়ে তরমুজ চাষে আশানুরুপ ফলন পাওয়া গেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে উপজেলায় এই প্রথমবার অসময়ে তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা খুশি। উপজেলার জাওয়াখালী, শংকরকাটি, দক্ষিণ পশ্চিম আটুলিয়াসহ অন্যান্য গ্রামে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

জাওয়াখালী গ্রামের তরমুজ চাষি সন্দিপ কুমার গায়েন বলেন, শ্যামনগর কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করে তিন বিঘা জমি ঘেরের আইলে এই তরমুজ চাষ করেছিলেন। সেখান থেকে তিনি ৪শ কেজি তরমুজ পেয়েছেন। প্রতিটির ওজন প্রায় ৩ কেজি। সর্বনিম্ন ওজন হয়েছে ৫ শত গ্রাম। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার টাকার তরমুজ।

আটুলিয়া গ্রামের তরমুজ চাষি হৈমন্তি সরদার বলেন, তিনি ১০ কাঠা জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। ফলন পেয়েছেন ৪শ কেজি। তার খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা এবং খাওয়া বাদে বিক্রি হয় প্রায় ১২ হাজার টাকার তরমুজ। অনুরূপ লাভের কথা বলেন, মৌসুম ছাড়া তরমুজ চাষি একই গ্রামের মহানন্দ মন্ডল, তরুণ মন্ডল, নিশিকান্ত মন্ডল।

চাষিরা জানান, তরমুজ ১ আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চাষ হয়ে থাকে। ভাল ফলনের জন্য ভার্মি কম্পোষ্ট, ডিএপি, সালফার, দস্তা, ম্যাগেনেশিয়াম সার প্রয়োগ করেছেন এবং লেদা পোকা বা অন্যান্য পোকা দমনের জন্য জৈব পদ্ধতি সেভ ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। তরমুজের জাত হিসাবে তারা জানান ব্লাক চ্যাম্প। এটি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। এই তরমুজ চাষে ঝুঁকির মধ্যে ছিল মিষ্টি পানির অভাব, লবণাক্ততা ও খরা। তরমুজ চাষি হৈমন্তি সরদার বলেন, প্রচন্ড রৌদ্রে তার কিছু ফল শুকিয়ে যায়ে। সন্দিপ গায়েন বলেন, অল্প জায়গা ঘেরের আইলে অসময়ে তরমুজ চাষ করা সম্ভব এবং পরিশ্রম কম। অসময়ে তরমুজ চাষের আশানুরূপ ফলন ও অর্থনৈতিক লাভ হওয়ায় অনেক কৃষক আগামীতে চাষ করবেন বলে জানান। জাওয়াখালী গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় গায়েন, ইন্দ্রজিৎ গায়েন বলেন এটি স্বল্প সময়ে ভাল উৎপাদনের ফসল। ইচ্ছা করলে ভাল দামও পাওয়া সম্ভব। সকল চাষি আগামীতে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তা কামনা করেন এবং এ বছর অসময়ে তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য কৃষি অফিসার সহ কৃষি অফিসকে ধন্যবাদ জানান।

উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম এনামুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় এবার প্রথম মৌসুমছাড়া তরমুজ চাষ করা হয়েছে। অসময়ে তরমুজ চাষে স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকরা তরমুজের মূল্য কম পেয়েছে। আগামীতে কৃষকরা যাতে বেশি মূল্য পান সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD