April 19, 2024, 10:14 pm

গাইবান্ধায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ বাবাকে হত্যা

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বৈষ্ণবদাস গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে পুত্রসহ ৪ আসামিকে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গ্রেফতার করেছে। আজ মঙ্গলবার পিতাকে হত্যা রহস্যের বিষয়টি পিবিআই কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্থানীয় সংবাদিকদের জানায়।

পিবিআই পুলিশ সুপার এ.এম আর এম আলিফ জানান, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার বৈষ্ণব দাস গ্রামের সেকেন্দার আলী বাদশার পুত্র জাহিদুল ইসলামের সাথে পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের মৃত জলিলের পুত্র রফিকুল ইসলামের জমিজমা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মামলা মোকর্দ্দমা ও শত্রুতা চলে আসছিল। প্রায়ই তাদেরকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। ২০১৮ সালের ৪মে সকালে হত্যাকান্ডের শিকার সেকেন্দার আলী বাদশা আসামি জাহিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে ধান দেখার জন্য যায়। তখন বাদি জাহিদুলের প্রতিবেশী মামা জামাত আলী এগিয়ে গিয়ে দেখে বাদি জাহিদুলের পিতা ভিকটিম সেকেন্দার আলী বাদশা উক্ত বাঁশঝাড়ের ভেতরে মাটির ওপর পড়ে গোঙ্গাচ্ছে। তখন জামাত আলী মন্ডল বাদির বাড়ির লোকজনকে সংবাদ দিলে বাদির বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে সেকেন্দার আলী বাদশাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রংপুর নেয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে সাদুল্যাপুর থানায় মামলা দায়ের করে। পরে আদালত মামলাটি পিবিআই পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

পিবিআই তদন্তকালে সেকেন্দার আলীকে হত্যার বিষয়ে নিশ্চিত হয়। পীরগঞ্জের কাশেমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামকে হত্যার আসামি করার জন্য বাদি জাহিদুল প্রতিবেশী মামা জামাত আলী, বৈষ্ণব দাস গ্রামের মৃত পরপ উদ্দিনের পুত্র আব্দুল মোন্নাফ ও আব্দুল আজিজ ২০১৮ সালের ৩ মে সেকেন্দার আলী বাদশাকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করে। সেদিন রাতে সেকেন্দার আলী বাদশা বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে একা বসে থাকায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা সেখানে গিয়ে সেকেন্দার আলীকে আসামি মোন্নাফ ও আজিজ গেঞ্জি গলায় পেঁচিয়ে মুখ চেপে ধরে। পরে আসামিরা জামাত আলী ও জাহেদুল ইসলাম সহযোগিতায় পাঁজাকোলে তুলে পুকুর পাড় হতে ইউনুছ আলীর বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে নাক-মুখ চেপে ধরায় সেকেন্দার আলী হাত পা নড়াচড়া বন্ধ করলে তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে বাঁশঝাড়ের ভিতর একটি নালায় তাকে ফেলে চলে যায়। পরদিন ৪মে বিকেলে জামাত আলী তাকে দেখতে গিয়ে গোঙ্গানো ও জীবিত অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় সেখানে ১৮ বছর বয়সী লিমন মিয়া নামে এক ছেলে বাদশাকে টানা হেঁচড়া করতে দেখে ফেলায় জামাত আলী ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। পরে জামাত আলীসহ এলাকার লোকজন বাদশাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। ফলে পিবিআই সদস্যরা ব্যাপক তদন্ত করে মামলার কথিত বাদি নিহত সেকেন্দারের পুত্র জাহিদুল ইসলাম, তার মামা জামাত আলী মন্ডল, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মোন্নাফকে গ্রেফতার করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD