April 18, 2024, 5:45 am

মধুমাস জ্যেষ্ঠের রসালো ফলে বগুড়ার বাজার ভরা : দাম চড়া

আলমগীর হোসেন : মধূ মাস জ্যেষ্ঠের শুরু থেকেই বগুড়ার বাজারে নানা রসালো দেশিও ফলের প্রচুর আমদানি হলেও দাম অনেকটাই চড়া। সেকারণে এসব ফল মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কিছুটা বাইরে। বাজারে এখন জাতের পাকা আম, লিচু, জাম, ড্রাগন ফল, তাল, আনারস ও কাঁঠাল উঠেছে। গরম আসলেই আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ নানা ধরনের ফল খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আর এসব ফল বাজারে আসলে ব্যস্ততা বাড়ে আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে। আবার আড়ত থেকে খুচরা বিক্রেতা কিনে ভ্যান বা ভ্রাম্যমান ভাবে মৌসুমে ফল বিক্রি করছে। প্রথমে দিকে আরও আমের দাম বেশি ছিল। তবে আমসহ সকল ফলের কদর ছোট-বড় সবার কাছেই বেশি। এই ফল কাঁচা হোক বা পাকা দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে গ্রীস্মের গরম হাওয়ায় মধু রসের ভরা বিভিন্ন জাতের ফলে মিষ্টি সৌরভ নিয়ে আগমন ঘটেছে জ্যেষ্ঠ। জ্যেষ্ঠের দাবদায়ে সারাদেশে মেতে উঠেছে পাকা মিষ্টি বিভিন্ন জাতের ফলের রসে। মুধ মাসের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল মিশে আছে আমাদের ঐহিত্যর সাথে। মুধ মাসে আম ও লিচুসহ পর্যায়ক্রমে নানা রসালো ফল বাজারে আগমন ঘটেছে। এই মধূ মাসের বিভিন্ন রসালো ফল বগুড়ায় হাতেগনা কয়েকজন আড়তদার আমদানি করলেও তা সহ¯্রাধিক খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে জেলা জুড়ে বিক্রি হয়ে আসছে। এতে করে ব্যস্ততা বেড়েছে বগুড়ার বাজারে আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের। আম লিচু, জাম, ড্রাগন ও তালসহ অন্যান্য ফল বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বগুড়ার বাজারে আসতে শুরু করেছে। আবার আড়ত থেকে খুচরা বিক্রেতা কিনে ভ্যান বা ভ্রাম্যমান ভাবে মৌসুমে ফল বিক্রি করছে। এসব ফলের দাম প্রথমে দিকে অনেক চড়াও হলে ধীরে ধীরে দাম কিছুটা কমছে। বাড়তি দামে ফল কিনে খাওয়া মধ্যবিত্তদের কিছুটা কষ্ট সাধ্য। আমের দাম গত বছরের তুলনায় বেশী। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলের আমদানি কিছুটা কম। ঝড় বৃষ্টির কারণে আমের দাম বেশী বলে মনে করছেন আড়তদারগণ। চাপাইনবাবগঞ্জ ও রংপুরের ল্যাংড়া, খিরসা জাতে আম বাজারে প্রচুর। কিন্তু এসব ল্যাংড়া জাতের আম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১শ’ টাকা, হিমসাগার আম প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকায় এবং খিরসা ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দিনাজপুর থেকে লিচু বগুড়ার বাজারে আসছে। এসব লিচুর দামও চড়া। এ লিচু প্রতি একশতটি ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর পর রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা, ঈশ^রদী থেকে লিচু আসলে আরও দাম কমবে। এ মৌসুমে রসালো টক মিষ্টি জাম প্রতিকেজি ২০০-২৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ড্রাগন ফল বাজারে আসছে তা অনেক দাম বেশী। এ ড্রাগন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩শত টাকায়। আরেক রসালো জাতীয় ফল কাঁঠালও বাজারে এসেছে।

রিক্সা চালক খায়রুল ইসলাম জানান, তার তিন ছেলে মেয়ে জাম ও লিচু নিয়ে যেতে বলেছে। বাজারে এসে দেখি ৫০ টাকা পোয়া জাম এবং ৫০ পিস লিচুর দাম ১৫০ টাকা করে বিক্রি করছে। তার পক্ষে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) জাম এবং ৫০ টি লিচু কিনলে আর বাজার করার তেমন টাকা থাকবে না। কিন্তু ছেলে মেয়েদের আবদার তারা জাম লিচু খাবে। এসব ফল এত দামে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের কেনা অসম্ভব।
চাঁদনী বাজারে খুচরা ফল বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, বগুড়ার বাজারে আম, লিচু, জাম, ড্রাগন এখন বাহারি বিভিন্ন জাতের পাকা ফল উঠেছে। যে কোন ফল মৌসুমে শুরুতে একটু দাম বেশী থাকে। তাছাড়া বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যর দাম গত কয়েক মাস ধরে বেড়ে চলছে। মোকামেই সকল ফলের দাম বেশী হওয়ায় বেশী দামে কিনে একটু বেশী দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে, সকল ফলের আমদানি যত বাড়বে তখন কিছুটা ফলের দাম কমবে।

ষ্টেশন রোডে ভ্রাম্যমাণ আম বিক্রেতা সোলায়মান আলী জানান, একই জাতে এবং একই মানে ফল আমরা ভাড় করে বিক্রি করে থাকি। স্থায়ী ফল দোকানদের তুলনায় কিছুটা কম দামেই সকল ফল বিক্রি করে থাকি। ভাড়ে এবং রাস্তায় দেখে অনেক ক্রেতা আমাদের নিকট থেকে ফল কম দামেও কেনা না, কিন্তু উচ্চ দামে ওই স্থায়ী দোকান থেকে কিনছে। আমাদের ক্রয়কৃত ফল একদিনে বিক্রি করতে না পারলেও অনেক সময় পচে যায়, সেকারণে আমরা অনেক সময় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ি। বর্তমানে লিচুর দাম কিছুটা বেশী। রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে আম এবং রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা, ঈশ^রদী থেকে লিচু বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমবে। শহরের ষ্টেশন রোডের পাইকারী ফল বিক্রেতা মেসার্স মুন টেডার্স এর ম্যানেজার রুবেল মন্ডল জানান, এবার আমের আমদানি কিছুটা কম সেকারণে দাম কিছুটা বেশী। এবার শিলাবৃষ্টিতে অনেক জায়গা আম গাছ থেকে পড়ে গেছে। সেকারণে এবার আমের আমদানি কমে গেছে। তবে, আগামী সপ্তাহ থেকে রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জের আম পুরাপুরি বাজারে আসবে। আর রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গা, ঈশ^রদী থেকে লিচু বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD