October 13, 2024, 1:00 am
দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুর খানসামার আকস্মিক ঝড়ে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ও গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মৌসুমি ফল আম-লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পুরো উপজেলায় লোডশেডিং চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত আট শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, বুধবার রাত ১১টার পর হঠাৎ ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। দুই দফায় ঝড়ের তাণ্ডব প্রায় ঘণ্টাখানেক স্থায়ী ছিল। এতে আংগারপাড়া ইউনিয়নের সূর্বণখূলী ওকড়াবাড়ি, ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের বালাডাঙ্গী, চকরামপুর, হোসেনপুর, চকসাকোয়া, সরহদ্দ, ভেড়ভেড়ী, টংগুয়া মাদারপীর গ্রামের তিন শতাধিক ও আলোকঝাড়ি ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
তারা আরো জানান, প্রবল বাতাসে উড়ে গেছে ঘরের চাল। নষ্ট হয়েছে খাদ্যসামগ্রী-মালামাল। ছোট-বড় অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে, ছিঁড়ে পড়েছে বিদ্যুতের তার। রাস্তায় গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বসবাস করছে খোলা আকাশের নিচে। বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিস রাস্তায় পড়ে থাকা গাছগুলো সরানোর কাজ করছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ছুটে চলেছেন এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
সূবর্ণখুলী গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১১টার দিকে ঝড়ে বাড়ির পাশের বড় বড় গাছ হুড়মুড় করে ঘরের উপর ভেঙে পড়ে। এতে ঘর দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আমরা জীবন বাঁচাতে ঘরের বেড়া ভেঙে বের হই। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।
আংগারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা আহমেদ শাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা করা হচ্ছে। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিত্তবানসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় বলেন, ঝড়ে ৪৫ হেক্টর বোরো ধান, ২৫ হেক্টর পাট, ১০ হেক্টর সবজি, ২৫ হেক্টর আম, ৩৫ হেক্টর লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ চলছে।
খানসামার ইউএনও রাশিদা আক্তার বলেন, ক্ষতির পরিমাণ ও ভুক্তভোগীদের তালিকা প্রণয়নে ইউনিয়ন পরিষদ ও কৃষি বিভাগ কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী, টিন ও আর্থিক সহায়তা করা হবে।