September 28, 2023, 1:39 am

News Headline :
জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের অভিনন্দন ভিসানীতি নিয়ে বিব্রত বিভ্রান্ত কিংবা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: নওগাঁয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়লেন টাইগাররা মহানবী (সা.) এর আদর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নন্দীগ্রাম সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা নন্দীগ্রামে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালি বগুড়া মিলেনিয়াম স্কলাস্টিক স্কুল এন্ড কলেজ বার্ষিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় উদ্ভাবন মেলা অনুষ্ঠিত বগুড়া সদরের বামনপাড়া থেকে অটোরিক্সা ছিনতাইকারী মহিলা গ্যাং এর ২ সদস্য আটক বগুড়ায় বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত ৫ বছরে এআইআইবি বাংলাদেশে ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে

৫ বছরে সেতুর পাইলিং ছাড়া কিছুই হয়নি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাপাত্তা

যমুনা নিউজ বিডিঃ মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি লাঘবের লক্ষ্যে ইছামতি নদীর ওপর প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেতুর পাইলিং কাজ ছাড়া আর কিছুই হয়নি। সেতুর কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। এ সেতুটি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের সাঁকোরপাড় নামক স্থানে ইছামতি নদীর ওপর ২০১৮ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী ২০০০ মিটার চেইনেজে ৬০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজের জন্য রংপুর বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২’র অধীনে ৩ কোটি ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৬ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেতুটির নির্মাণ কাজ বিগত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয় এবং ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। ২০১৮ সালে তৎকালিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বটতলীর সাঁকোরপাড় নামক স্থানে ইছামতি নদীতে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। এরপর শুধুমাত্র সেতুটির পাইলিং কাজ ছাড়া আর কোন কাজই হয়নি।

আরো জানা গেছে, উপজেলার গোয়ালডিহি ও দুবলিয়া গ্রামের মানুষের সেতুবন্ধন করবে এই ব্রিজটি। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণে কাজের অগ্রগতি না থাকায় বিকল্প পথে চলাচল করতে ইউনিয়ন পরিষদ ওই স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেছে। অপরদিকে, সময়মতো সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে ইছামতি নদীর দুইপাড়ের কৃষক-শ্রমিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অর্ধ-লক্ষাধিক নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন কাজে ওইপথে যাতায়াতকারীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে এ নদীর তীরে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীদের চরম বিপদের মধ্যে পড়তে হয়।

গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বড়বাড়ি এলাকার বৃদ্ধ আফতাবউদ্দিন (৮১) আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, মন কান্দেছে (কান্না) বাহে। হামার (আমাদের) কী হক নাই, মরার (মৃত্যু) আগে এই পুল (ব্রিজ) দেখিবার। এক বয়স্ক মানুষের পাও (পা) ভাঙ্গি গেইছে (গেছে) এই সাঁকো থাকি (থেকে) পড়ি। আমরা গরীব মানুষ। বৃষ্টির সময় হামাক (আমাদের) যে কী কষ্ট করির (করার) নাগে (লাগে)। এই দুঃখ-কষ্ট থুবার (রাখার) জাগা (জায়গা) নাই। কতদিনে যে শেষ হইবে সেতুর নির্মাণ কাজ।

দুবলিয়া গ্রামের নবিউল ইসলাম (৩৮) বলেন, কাজ শুরু করি ঠিকাদারের লোকের আর দেখাই নাই। কতদিনে যে ব্রিজের কাম শেষ হইবে? শুনুছি কাম না করিই অর্ধেক বিল তুলে নিছে ঠিকাদার।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সফরিউদ্দিন বলেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অর্ধেক বিল তুলে নিয়েছে। থমকে গিয়েছে ব্রিজ নির্মাণের কাজ। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে অত্রাঞ্চলের মানুষ।

গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অত্রাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল। কিন্তু ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা হতাশায় পরিণত হয়েছে। আপাতত চলাচলের জন্য ওইস্থানে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে দেয়া হয়েছে।মানুষের চরম ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আশা করছি।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এহতেশামের স্বত্ত্বাধিকারী এহেতেশামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এফএম খাইরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ব্রিজের অবশিষ্ট কাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD