April 16, 2024, 8:36 am

ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে সাতমাথায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ফুলবাড়ি দিবস উপলক্ষে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বগুড়ার উদ্যোগে শুক্রবার সকালে শহীদ খোকন পার্কস্থ শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য ও সাতমাথায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বগুড়া জেলার আহ্বায়ক, সিপিবি জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বগুড়া জেলা সদস্য সচিব, বাসদ বগুড়া জেলার সাবেক সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সদস্যসচিব অ্যাড.দিলরুবা নূরী, সিপিবি জেলা নেতা হাসান আলী সেখ, গণতান্ত্রিক গণ মোর্চার জেলা নেতা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলার সমন্বয়কারী আব্দুর রশিদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন বগুড়া জেলা ফোরাম সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না বলেন, ‘উন্মুক্ত না, বিদেশী না, রপ্তানী না’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচীতে আচমকা পিছন থেকে পুলিশ গুলি চালায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্র তরিকুলসহ সালেকিন, আলামিন নিহত হয়। বাবুল নামে একজন পঙ্গু হয়। শত শত মানুষ আহত হয়। ২৬ আগস্টের এই ঘটনার পর আন্দোলনের এক পর্যায়ে ৩০ আগস্ট তৎকালীন চার দলীয় সরকার আন্দোলন কারীদের সাথে ৬ দফা চুক্তি করে। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাও ফুলবাড়িতে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দেয় তারা ক্ষমতায় গেলে এই ৬ দফা বাস্তবায়ন করবে। সেই ৬ দফার অন্যতম শর্ত ছিল এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়িসহ দেশ থেকে তাড়াতে হবে, ফুলবাড়িসহ দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে না। নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে দুইলক্ষটাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এশিয়া এনার্জির দালালদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। আন্দোলনকারীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই চুক্তির কিছু দফা বাস্তবায়ন হলেও চারদলীয় সরকার পরবর্তীতে ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রতিশ্রুতি প্রদানকারী আওয়ামী সরকার কেউই মূল যে দফা এশিয়া এনার্জিকে বিতারণ করা, তাতো করেইনি বরং জিসিএম নামে এই কোম্পানীকে প্রবেশ করানোর চক্রান্ত এখনো অব্যাহত রেখেছে।”

সমাবেশে অ্যাড. দিলরুবা নূরী বলেন, ‘প্রাণ-প্রকৃতি, জীব-বৈচিত্র, জনস্বাস্থ্য গুরুত্ব না দিলে মহা বিপর্যয় যে দেখা যায় কোভিড-১৯ তার প্রমাণ। উন্নয়নের নামে কতিপয় মানুষে মুনাফার নির্মম শিকার আজ দেশবাসী। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায়। কাজ হারিয়ে, খাদ্য, চিকিৎসা-শিক্ষা সংকটে মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। কোথায় গিয়ে, কবে থামবে এ মহামারী তা বলা মুশকিল। এত কিছুর পরেও থেমে নেই সম্পদ লুন্ঠন ও দূর্নীতির। উন্নয়নের নামে জাতীয় সম্পদ, সম্ভাবনা ও সক্ষমতাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ফুলবাড়ীর সংগ্রাম এ দাবি আদায়ে সৃষ্টি করেছিল গণঅভ্যুত্থান। লড়াই জারি দীর্ঘ ১৫ বছর। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে দাবি আদায়ের এ সংগ্রাম জোড়ালো করতে হবে।’
অন্যান্য নেতৃবৃন্দ দাবি তোলেন, এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) কে দেশ থেকে বহিষ্কার, খুনি কোম্পানী ও দালালদের বিচারসহ রক্তে লেখা ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করার, ফুলবাড়ী নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের, চীন-ভারত-দেশি কোম্পানীর মাধ্যমে ফুলবাড়ী বড়পুকুরিয়ার উত্তরাংশে উন্মুক্ত কয়লা খীনর ষড়যন্ত্র বন্ধ করার, রামপাল-রূপপুর প্রাণবিনাশী স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প বাতিল করে করোনাভাইরাস মোকাবেলাসহ সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাখাতে বরাদ্দের, উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে সুলভে সার্বক্ষণিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD