March 28, 2024, 8:15 pm

বগুড়ায় সারের কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই

আবুল কালাম আজাদঃ আমন মৌসুমের শুরুতেই জমিতে প্রয়োজনীয় সার দিতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বগুড়ার কৃষকরা। তারা বারবার সার সঙ্কটের কথা বললেও কৃষি বিভাগ বলছে, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং অতিরিক্ত সার মজুদও আছে। কিন্তু কৃষকরা কেন সার পাচ্ছেন না, এ বিষয়ে কালোবাজারি ও অসাধু ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নিতেও দেখা যাচ্ছে না।
জেলায় ইউরিয়া সার বিক্রির জন্য বিসিআইসির ১৬৩ জন এবং অন্যান্য সার বিক্রির জন্য বিএডিসির ২৩৩ জনসহ মোট ৩৯৬ জন ডিলার রয়েছেন; কিন্তু বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, স্বল্পসংখ্যক ডিলার ছাড়া বাকি ডিলাররা তাদের বরাদ্দকৃত সার কালোবাজারে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। ফলে এক এলাকার সার অন্য এলাকায় চলে গিয়ে সারের সঙ্কট সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন জানলেও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এসব নন ব্যবসায়ী ডিলাররা প্রশাসনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে এমন অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে।
জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে সার সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কৃষকরা ডিলারের দোকানের সামনে সার কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। তবুও চাহিদামাফিক সার তারা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে উপজেলা সারিয়াকান্দি গ্রামের কৃষক জুয়েল জানান, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। আমার দরকার পাঁচ বস্তা ইউরিয়া সার। আমাকে দেয়া হয়েছে মাত্র এক বস্তা।
নন্দীগ্রামে কৃষকরা প্রয়োজন মতো ইউরিয়া সার না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। সময় মতো সার দিতে না পারলে ধানের ফলন কম হওয়ার আশাঙ্কা রয়েছে। ধুনট, সারিয়াকান্দি, কাহালুসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে সার সঙ্কটের খবর পাওয়া গেছে।
সোনাতলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে সার বিক্রি মনিটরিং এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়। সোনাতলা কৃষি অফিসার মাসুদ আহমেদ বলেন, নিয়মিত সারের বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কেউ কালোবাজারে সার বিক্রি করলে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ দিকে গত সোমবার দুপুরে বগুড়া ডিসি অফিসের সভাকক্ষে সার উত্তোলন, বিতরণ ও মজুদ পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করা হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপপরিচালক দুলাল হোসেন। এতে জেলা প্রশাসক বলেন, সারের কোনো সঙ্কট নেই। চাহিদা মোতাবেক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যদি কোনো ডিলার সার সঙ্কট সৃষ্টি কিংবা কালোবাজারি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপপরিচালক দুলাল হোনে বলেন, সময় মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমনা রোপণ পিছিয়ে গেছে। এখন একসাথে সবাই রোপণ শুরু করায় একসাথে বেশি সারের প্রয়োজন পড়ায় সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে গত ২১ আগস্ট কৃষি মন্ত্রণালয় বগুড়া জেলায় অতিরিক্ত দুই হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দিয়েছে, যা উপজেলাভিত্তিক বরাদ্দও দেয়া হয়ে গেছে। তাই এখন আর সার সঙ্কট থাকার কথা নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD