October 4, 2024, 6:04 am
হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হাকিমপুর হিলিতে চলতি মৌসুমে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ পুরাদমে শুরু করেছের কৃষকেরা। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকেরা। বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ, সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ সবকিছুই দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ইরি বোরো চাষে অতিরিক্ত খরচের দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের কপালে।
মাঘের হিমেল বাতাস, কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশাকে উপক্ষো করে জমি তৈরি ও বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ করেছেন পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছে আদিবাসী নারী শ্রমিকরাও। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ইরি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ’ ৭৪ হেক্টর জমিতে। শুরু থেকে কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সবধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ইরি বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। জমিতে বাড়তি সার হিসেবে বিঘা প্রতি ৬-৭ ভ্যান গোবর সার ছিটিয়ে দিচ্ছে। এরপর গভীর নলকূপ থেকে পানি দিয়ে জমি ভিজিয়ে নিয়ে পাওয়ার টিলার দিয়ে কেউ বা মেসি (ট্রাক্টর) দিয়ে চাষ করছেন।
এতে বিঘা প্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসার মিশিয়ে দ্বিতীয় বার চাষ করে চারা রোপণের জমি তৈরি করে জমিতে চারা রোপণ করছেন। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় ১৫-২০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।
উপজেলার জাংগই গ্রামের কৃষক বলেন, আমি ১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে থাকি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার সম্পূর্ণ জমিতে চারা রোপণ শেষ হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার খরচের হিসাব বেশি গুনতে হচ্ছে। পানি সেচের খরচ, জমি চাষ করা,সার, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ সবকিছুর দাম বেশি। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে উফশী জাতের ধানের বীজ ও সার পেয়ে উপকার হয়েছে। তবে এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের মতো এবার ও ইরিবোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। গত বছর ফসলের দাম ভালো পেয়েছি। আশা করছি এবারও ভালো দাম পাবো তাহলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো বলে আশা করছি।
উপজেলার খাট্রাউচনা মাঠের জমি রোপণ করা শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা কয়েকজন মিলে একটা দল তৈরি করেছি। দীর্ঘদিন থেকে ইরিবোরো ও আমন ধানের চারা রোপণ করে থাকি। এবার ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) ১৩শ’ টাকা করে নিচ্ছি। প্রতিদিন ৭ থকে ৮ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করতেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ইরি বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ’ ৭৪ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে চারা রোপণ শুরু হয়েছে। আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ইরি বোরো চাষ হবে।
ইতোমধ্যে উপজেলায় ১৫-২০ শতাংশ জমিতে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করা শেষ হয়েছে। এবার ধানের দাম ভালো পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে পারবে বলেও আশা করছেন।