September 16, 2024, 10:44 pm
নন্দীগ্রাম প্রতিনিধিঃ ১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার নন্দীগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাক-হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে নন্দীগ্রামে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
যুদ্ধ চলাকালীন সময় মুক্তিযোদ্ধারা আবু বক্করের নেতৃত্বে ভারতে ইউপি ডেরাডং সাব ডিভিশনে ভান্ডুয়া সামরিক কেন্দ্রের সাত নং সেক্টরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ভারত-বাংলাদেশের হিলি সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ সময় তারা পাক সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন।
এরপর তাঁরা নন্দীগ্রাম আসার পথে কাহালুর কড়ই বামুজা গ্রামে পাক হানাদারদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। ওই যুদ্ধে ১৮ জন পাক সেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা আবু বক্করের নেতৃত্বে নয় ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে প্রবেশ করেন। এখানে তিন দফা যুদ্ধ করতে হয়েছে তাদের।
প্রথমে ১১ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামের মন্ডল পুকুর সিএন্ডবি’র রাস্তার পাশে থেকে পাক সেনা ও তাদের দোসরদের উপর আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। ওইদিন রণবাঘা বড় ব্রীজের নিকট রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। অপরদিকে বেলঘরিয়ায় পাক সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে একজন পাক সেনা আত্মসমর্পণ করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক সেনারা রাজাকারদের সহযোগীতায় চাকলমা গ্রামের আকরাম হোসেন, বাদলাশন গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ, রুস্তমপুর গ্রামের মহিউদ্দিন, ভাটরা গ্রামের আব্দুল সোবাহান, নন্দীগ্রামের মোফাজ্জল হোসেন, হাটকড়ই গ্রামের ছমিরউদ্দিন ও তার দুই পুত্র আব্দুল রাজ্জাক ও আব্দুল রশিদকে নির্মম ভাবে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা থানায় আক্রমণ চালিয়ে প্রায় দুইশো পাক সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে লড়াই করে। সেই যুদ্ধে ৮০ জন রাজাকারকে আটকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে তারা। এছাড়া নন্দীগ্রামের ডাকনীতলায় পাক সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন-মরণ যুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার ও রাজাকারদের হটিয়ে নন্দীগ্রাম হানাদার মুক্ত করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে।