June 3, 2023, 7:24 am
স্টাফ রিপোর্টার রাশেদ : সকালে ঘাসের ডগার শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সকালের শিশির আর সন্ধ্যায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে বগুড়ার শহরসহ প্রত্যন্ত গ্রামেও। ফলে শীত নিবারনে শহরতলী ও গ্রামবাসীরা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে ভিড় বাড়ছে লেপ-তোশকের দোকানে। যে কারণে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশকের কারিগরদের। শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় লেপ-তোশক প্রস্তুতকারী কারিগরদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। বগুড়া শহরের লেপ-তোশক তৈরির দোকানগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায় এসব শীত বস্ত্রের। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখে গেছে শীতকে সামনে রেখে এমন প্রস্তুতির দৃশ্য। শহর ঘুড়ে দেখা গেছে, পোশাক মার্কেটে শীতের গরম কাপড় কেনার ধুম এখনো পড়েনি। প্রতিটি দোকানিরা বলছে, শীতের গরম কাপড় বেচা-কেনা শুরু হয় একটু দেড়িতে। শীতের গরম কাপড়ের তেমন চাহিদা না থাকলেও তুলা বাজারে শুরু হয়েছে তুলার বেচা-কেনা আর লেপ তৈরির ধুম। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী হরেক রকমের তুলা দিয়ে তৈরি করছেন ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের লেপ। লেপ তৈরির কারিগররা বলছেন শীতের তীব্রতা শুরু হলে লেপ তৈরির ব্যস্ততা আরো বেড়ে যাবে। প্রতি বছরের এ সময়টায় আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। জানতে চাইলে বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা ৩নং রেলঘুমটির পিন্টু ট্রেডার্সের লেপ তৈরির কারিগর শফিকুল ইসলাম জানান, বড় আকারের লেপ তৈরির মজুরী ৩৫০টাকা আর মাঝারি আকারের লেপ তৈরির মজুরী ২০০টাকা। তুলা, কাপড়, কভার এবং মজুরীসহ একটি বড় লেপ তৈরিতে মোট খরচ পড়ে ২ হাজার ৫০০টাকা। আর মাঝারী আকারের লেপে মোট খরচ পড়ে ১ হাজার ৫০০টাকা। এখন তারা সারাদিনে ৭-৮টি লেপ তৈরি করেন। তিনি আরো বলেন, ভালো মানের তুলা ২৫০টাকা প্রতি কেজি। আর গার্মেন্টেস এর বিভিন্ন রকমের তুলা ৫০-১০০টাকা প্রতি কেজি। ১টি বড় লেপ তৈরি করতে ৪ কেজি তুলার প্রয়োজন হয়। আর মাঝারী আকারের লেপে আড়াই কেজি তুলা লাগে। বড় আকারের লেপে ১০ গজ লাল কাপড়ের প্রয়োজন হয়। আর বেশিরভাগ লেপ লাল কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। লেপ তৈরি করতে আসা শহরের চারমাথা নিশ্চিন্তপুর এলাকার শিউলি বেগম বলেন, বাড়িতে যে লেপ আছে তা দিয়ে আগের লোকসংখ্যার চাহিদা পূরণ হয়েছে। তবে কিছু দিন আগে আমার মেয়েকে বিবাহ দিয়েছি। জামাই বাড়িতে নতুন লেপ দিতে হবে তাই শীত শুরুর আগে-ভাগেই পছন্দমত লেপ তৈরি করে নিচ্ছি। তুলা ব্যবসায়ী ফজলে রাব্বি বলেন, এখন শীতের কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। শীতের প্রভাব এখনো তেমন পড়েনি। তবে শীতের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য লোকজন আগাম লেপ তৈরি করছেন। আরো কয়েকদিন পর কাজ-কাম বেশি হবে। আমার দোকানে কারপাল, উল, কাপাস, শিমুল ও গার্মেন্টেস এর কালার জাতের তুলা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা আরো জানান শীতের শুরু থেকে অন্তত ৪টি মাস লেপ-তোশক বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। এ সময় সবচেয়ে বেশি লেপ বিক্রি হয়ে থাকে। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয়।