April 27, 2024, 7:52 am

শাবান মাসে আইয়ামে বিজের রোজার দিনক্ষণ ও ফজিলত

যমুনা নিউজ বিডি: আরবি হিজরি সনের ৮ম মাস শাবান। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য কিছু মাস পুরস্কার ও মহিমান্বিত করেছেন। তার মধ্যে শাবান মাস অন্যতম।

বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসকে তার নিজের মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি শাবান মাসে রোজা পালনের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করেছেন।

শাবান মাসে আইয়ামে বিজের রোজার দিনক্ষণ ও ফজিলত

প্রত্যেক চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজার গুরুত্ব অনেক বেশি। সেই হিসেবে শাবান মাসেও এই তিনটি রোজা অনেক মূল্যবান। চন্দ্রমাসের মধ্যবর্তী এই তিনদিনকে (১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ) আরবি পরিভাষায় আইয়ামে বিজ বলা হয়। সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব হয় এই তিনটি রোজায়। বাংলাদেশে আগামী ২৪, ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি (শনি, রবি ও সোম) হলো ২০২৪ সালের শাবান মাসের আইয়ামে বিজ।

আইয়ামে বিজের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে ৩টি করে রোজা রাখা সারাবছর রোজা রাখার সমান’। (বুখারি: ১১৫৯, ১৯৭৫)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে ৩টি অসিয়ত করেছেন—(এক) প্রতি মাসে তিনদিন রোজা রাখা, (দুই) দুই রাকাত চাশতের নামাজ পড়া, (৩) ঘুমের আগে বিতরের নামাজ পড়া’। (সহিহ বুখারি: ১১৭৮)

হাদিসগুলো প্রমাণ করছে, আইয়ামে বিজের রোজা অত্যধিক সওয়াব লাভের আমল এবং নবীজি (সা.) এর পছন্দের আমল।

এই ৩ রোজার গুরুত্ব শাবান মাসে আরো বেড়ে যায়। কেননা প্রিয়নবী (সা.) শাবান মাসে সবচেয়ে বেশি নফল রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি নবী কারিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক রোজা অন্যকোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের শেষদিকের অল্প কদিন ছাড়া বলতে গেলে সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। (তিরমিজি: ৭৩৭)

শাবান মাসে ইবাদত বন্দেগির গুরুত্ব বোঝাতে নবীজি (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘রমজান ও রজবের মধ্যবর্তী এ মাসের ব্যাপারে মানুষ উদাসীন থাকে। এটা এমন মাস, যে মাসে বান্দার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই, আল্লাহর কাছে আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার’। (সুনানে নাসায়ি: ২৩৫৭)

এছাড়াও শাবান মাসে আইয়ামে বিজের মধ্যেই রয়েছে এক মর্যাদাপূর্ণ রাত ‘শবে বরাত’। ১৪ শাবান দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলা হয়। একাধিক সহিহ হাদিসে শবে বরাতের মর্যাদা প্রমাণিত। শবে বরাতে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ নাজিল হয়। বিখ্যাত সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)

তাই শাবান মাসে আইয়ামে বিজের রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন আলেমরা। আর নফল রোজা শুধু সওয়াবের মাধ্যম নয়, জাহান্নাম থেকেও দূরে সরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে ব্যক্তি একদিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে তার থেকে ১০০ বছরের দূরত্বে সরিয়ে রাখবেন। (আস সিলসিলাতুস সহিহাহ: ২৫৬৫, খণ্ড-৬)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে শাবান মাসে আইয়ামে বিজের রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD