October 16, 2024, 7:49 am
যমুনা নিউজ বিডি: ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি শোনেননি এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। কয়েক বছর আগে গানটি দুই বাংলায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল। গানটি নিয়ে বলিউডে বেশ মাতামাতি হতে দেখা গেছে। এ গানের সুরকার, গীতিকার ও শিল্পী হিসেবে বিভিন্নজনের নাম উঠেছিল।
পরে জানা যায়, এ গানের স্রষ্টা ভারতের এক লোকসংগীত শিল্পী। তার নাম রতন কাহার। তিনি বিভিন্ন ধরনের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পেলেও আর্থিকবাবে স্বচ্ছল নন। একজন সংগীত স্রষ্টা হিসেবে জীবনের কাছে অনেক কিছুই তার পাওয়ার ছিল। কিন্তু তেমন কোনো প্রাপ্তি নেই এ সংগীত স্রষ্টার। তবে এবার সেই অপ্রাপ্তি যেন কিছুটা হলেও ঘুচে গেল।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে একটি ফোন আসে। আর সেই ফোনেই যেন খুশির হাওয়া বয়ে যায়। জানানো হয় পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানের স্রষ্টা রতন কাহার। তার পুত্রই প্রথম সুখবরটি পান। তবে ফোনে এটুকু জানার পর আর কিছু জিজ্ঞাসা করে উঠতে পারেননি তিনি। আনন্দে গলা ভারী হয়ে আসে তার। যেন এক অকল্পনীয় ঘটনা ঘটেছিল সেই মুহূর্তে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে থেকে চলতি বছরে মোট ৩৪ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করার জন্য। তাদের মধ্যে জায়গা পেয়েছেন বীরভূমের ভাদু লোকসংগীত গায়ক রতন কাহার। রতন কাহারকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমের বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দের সীমা নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বত্র তার নামের জয়জয়কার। অনেকেই বলছেন, অবশেষে তিনি জীবনের সন্ধিক্ষণে এসে যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন। পদ্মশ্রীর মতো সম্মান পেয়ে খুশি রতন।
বর্ষীয়ান এ শিল্পী এমন সম্মাননা প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি খুব আনন্দিত, খুব গর্বিত।’ এমন সম্মান পাওয়ার আগে তিনি যে সাধারণ কয়েকজন মানুষ ছাড়া সেইভাবে কারও কাছে সম্মান পাননি, সেই বিষয়টিও ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন। রতন কাহারের জীবনে পদ্মশ্রী সম্মান নতুন এক অধ্যায় তৈরি করেছে বলেই সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনরা মনে করছেন।
রতন কাহার দীর্ঘকাল ভাদু, টুসু, আলকাপ, ঝুমুরের মতো গান নিয়ে সংগীত রচনা এবং পরিবেশন করেছেন। তার রচিত ‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত। এক সময় এ গান নিয়ে চরম বিতর্ক রয়েছে।
গানটি নিয়ে বছর কয়েক আগে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন র্যাপ গায়ক বাদশা। তিনি রতন কাহারের অনুমতি ছাড়াই এ গান ব্যবহার করেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে বিষয়টি তার কানে গেলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং রতন কাহারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন।