July 26, 2024, 11:44 pm

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল, আধুনিক বিমানবন্দরের যুগে বাংলাদেশ

যমুনা নিউজ বিডি: বাংলাদেশকে অ্যাভিয়েশন হাবে পরিণত করতে বিদায়ী বছরে উদ্বোধন হলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। এর মাধ্যমে সনাতনী ধারা বিমানবন্দর পরিসেবা থেকে বেরিয়ে আধুনিক বিমানবন্দর যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। এই টার্মিনাল বিশ্বমানের যাত্রীসেবা এবং নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষে দেশের বিমান চলাচল খাতে আনবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ‘সফট ওপেনিং’ করেন। তবে টার্মিনাল ব্যবহার করে বিমান চলাচল শুরু হলেও এর পুরোপুরি ব্যবহার সম্ভব হবে ২০২৪ সালের শেষের দিকে। তখন বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা ও উন্নত যাত্রী সেবা নিশ্চিত সম্ভব হবে।

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‍তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার প্রত্যাশা ঢাকা ও কক্সবাজারের দুটি বিমানবন্দরের মাধ্যমে দেশটি ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের এভিয়েশন হাবে পরিণত হবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন এই টার্মিনালের নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরসহ অনেক বিখ্যাত স্থাপত্যের স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনতলা বিশিষ্ট এই টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮শে ডিসেম্বর। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকায় জাপানের মিৎসুবিশি, ফুজিটা ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং যৌথভাবে টার্মিনালটির নির্মাণ কাজ করেছে। এ টার্মিনালকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেলের একটি রুটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

ফ্রান্সের সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তির রাডারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় আকাশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছে এ টার্মিনালে। একটি টানেলের মাধ্যমে এই টার্মিনাল থেকে সরাসরি হজ ক্যাম্প ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনের সঙ্গে যাতায়াতের ব্যবস্থার কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

এই টার্মিনালটির যাত্রী ক্যাপাসিটি হবে ১ কোটি ৬০ লাখ। এখন যে দুটি টার্মিনালে আছে তার সক্ষমতা আছে ৮০ লাখ যাত্রী। ফলে তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। টার্মিনালের ফ্লোর আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গ মিটার। এর আগের দুটি টার্মিনালের মোট ফ্লোর স্পেস ছিলো ১ লাখ বর্গমিটার।

নতুন টার্মিনালে মোট বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে ২৬টি, যেখানে আগের দুটি টার্মিনালে মোট ব্রিজ ছিলো ৮টি। একই সঙ্গে নতুন টার্মিনালে মোট ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্কিং করা যাবে। আগের দুটিতে রাখা যেতো ২৯টি উড়োজাহাজ। আগে লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট ছিলো দুই টার্মিনাল মিলিয়ে আটটি। আর তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি বেল্ট আছে। এর পার্কিংয়ে একসঙ্গে রাখা যাবে ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি।

আগের দুটি টার্মিনালে মোট চেক ইন কাউন্টার ছিলো ৬২টি, আর ইমিগ্রেশন কাউন্টার ছিলো ১০৭টি। তৃতীয় টার্মিনালে আরো যুক্ত হয়েছে চেক ইন কাউন্টার ১১৫টি আর ইমিগ্রেশন কাউন্টার ১২৮টি।

কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন অবকাঠামোর সঙ্গে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমন্বয় ঘটনায় এখন থেকে নতুন থেকে যাত্রীসেবায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং অর্থাৎ লাগেজ ব্যবস্থাপনায় জাপান দায়িত্ব নেয়ার পর বিমানবন্দরটির সার্বিক ব্যবস্থাপনা সত্যিকার অর্থেই স্মার্ট হয়ে উঠবে বলে আশা করেছেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

নতুন টার্মিনালটি যাত্রীদের বিশ্বমানের সেবা দেবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। তবে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হবে এই টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হওয়ার জন্য। টার্মিনাল অপারেশনে ব্যবহৃত সরঞ্জামের প্রয়োজনীয় ক্যালিব্রেশন এবং প্রস্তুতির কারণে এই সময়ের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD