December 8, 2023, 9:43 am
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ কালবৈশাখীর তাণ্ডবে নওগাঁয় আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়েছে হাজার হাজার গাছের অপরিপক্ব আম। বাগান মালিকরা স্তূপ করে রাখা আম ২-৩ টাকা কেজিতে এসব কাচা আম বিক্রি করছেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
বদলগাছী আবহাওয়া অফিস সূত্রে যায়, শুক্রবার দিনগত রাত ২-৪টা পর্যন্ত নওগাঁয় ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি হয়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার। এ সময় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৩ মিলিমিটার।
নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় এ বছর ২৯ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। ৬ হাজার ৮০০ আম চাষির প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৫ টন। সে হিসেবে এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তিন লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৫ টন।
তিনি বলেন, শুক্রবারের ঝড়ে ঝরে পড়া আমের বেশিরভাগই নষ্ট হয়েছে। প্রতিকেজি আম প্রকারভেদে ২-৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দফায় দফায় আম ঝরে পড়ায় চাষিরা লোকসানের আশঙ্কা রয়েছেন।
সাপাহার উপজেলার মানিকুড়ি গ্রামে আমচাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, ৮০ বিঘা জমিতে ন্যাংড়া ও আম্রপালির দুটি বাগান আছে। ঝড়ে দুই বাগানে প্রায় ১০০ মণ আম ঝরে গেছে।
একই উপজেলার তিলনা গ্রামের বাগান মালিক এমএ নোমান বলেন, ছয় বিঘা জমিতে আম্রপালি, ল্যাংড়া ও ফজলি জাতের আম চাষ করি। ঝড়ে প্রায় ১৫ মণ আম ঝরে গেছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে আম্রপালি আমের। ঝরে পড়া এসব আম বাড়ি থেকে আড়াই টাকা কেজি দরে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়।
উপজেলার ভাই ভাই বাণিজ্যালয় আড়তের সত্ত্বাধিকারী মোদাচ্ছের আলী বলেন, ঝরে পড়া প্রায় দেড় হাজার মণ আম আড়াই থেকে তিন টাকা কেজিতে কিনেছি। এসব আমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আম্রপালি ও ল্যাংড়া।
সাপাহার বাজার আম ব্যবসায়ী আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি কার্ত্তিক সাহা বলেন, দুদিনের ঝড়ে সাপাহার ও পোরশায় আম বাগান থেকে অন্তত ৩৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। শনিবার সাপাহার থেকে ১০০ ট্রাক আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গেছে। প্রতি গাড়িতে ৫০০ ক্যারেট (এক ক্যারেটে ২৫ কেজি) আম।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ঝড়ে কোন ফসলের কী ক্ষতি হয়েছে সেটি এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। চলতি মাসেই কয়েক দফা ঝড়ে নওগাঁর বাগানগুলোর প্রায় ১৫ শতাংশ আম ঝরে গেছে। ঝড়ে ফজলি, ল্যাংড়া, নাক ফজলি, গোপালভোগ জাতের গাছগুলো বড় হওয়ায় এসব গাছের আম বেশি ঝরে পড়েছে।