July 27, 2024, 4:14 am

রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিল্পোদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে সংকট আরও গভীর হবে। চলমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন কর্মসূচি না নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) মহাসমাবেশ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচি নিয়ে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিটিএমএ, এমসিসিআইয়ের নেতাদের মতামত জানতে চাইলে তারা গণমাধ্যমের কাছে তাদের এ আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নানান চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ডলার সংকট, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রেমিট্যান্স আয় কমে যাওয়া, বিনিয়োগে ধীরগতির মত কঠিন সমস্যা রয়েছে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে। এর পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সর্বশেষ ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের মত আন্তর্জাতিক সংকটময় পরিস্থিতির প্রভাবও রয়েছে।

এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক সংকটের সাথে অভ্যন্তরীণ সংকট যুক্ত হলে শিল্পোৎপাদন, ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডসহ সামগ্রিক অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান তারা। দেশের অভ্যন্তরে সরবরাহ ব্যাহত হলে বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ার পাশাপাশি শিল্পোৎপাদনও ব্যাহত হবে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব বাজারে যেসব পণ্য সরবরাহ হয় সেটিও বাধাগ্রস্ত হবে। সংকট ঘনীভূত হলে বৈশ্বিক ক্রেতারাও বিকল্প উৎস খুঁজবেন।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, “রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ভরশীল। বর্তমানে অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি করা যাচ্ছে না। কাঁচামালের অভাবে অনেক কারখানা পুরোপুরি উৎপাদন করতে পারছে না। এমন সময়ে নতুন কোনো অস্থিরতা দেখা দিলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে।”

রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কর্মসূচি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। কারণ সাম্প্রতিক সময়ের কর্মসূচিতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান জানান, “বৈশ্বিক পরিস্থিতি ভালো নয়। ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা কমছে। এরমধ্যে দেশের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে রপ্তানিমুখী শিল্প খুবই সংকটে পড়বে। এরকম সময়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি। অস্থিরতা হলে ক্রেতারা বিকল্প খুঁজবেন। অর্থনীতিতে চাপ আরও বাড়বে।”

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “এটা বাংলাদেশের ব্যর্থতা; বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের। নির্বাচন এলেই এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যার খেসারত দিতে হয় পুরো দেশকে। এবারও সংঘাত দেখা দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে– এই সংঘাত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।”

“সংঘাত চরম আকার নিলে তার অর্থনৈতিক প্রভাব হবে ব্যাপক। কারণ এবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ দুর্বল, বৈশ্বিক অবস্থাও পক্ষে নেই,” বলেন তিনি।

সূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD