July 26, 2024, 11:56 pm

বগুড়ায় নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ

রাজিবুল ইসলাম রক্তিম: সারাদেশের ন্যায় বগুড়াতেও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রব্যমূল্যের দাম। কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না দ্রব্যমূলের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মাছ, মাংস, আদা, রসুন, পিঁয়াজ, আলু,মসলা ও কাঁচা সবজির দাম চাল ডাল চিনি আটা ময়দা তেলের দামও বাড়তি। এদিকে দ্রব্যমূল্য বাজারে গিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের। পরিবার নিয়ে খেয়েপরে বাঁচতেই চোখে অন্ধকার দেখছেন অনেকে। নিত্যপণ্যের অস্থির বাজারে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বেশকিছু পণ্যের দাম। বিশেষত, বেড়েছে আদা রসুন ও আগুন লেগেছে কাঁচা সবজি ও মাছের বাজারে। ক্রেতারা বলছে, মাছ-মাংস, মসলা ও শাক-সবজিসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামে দারুণ বিপাকে পরতে হচ্ছে আমাদের মত নিম্নআয়ের মানুষদের।

বগুড়ার ফতেহ আলী বাজার, রাজা বাজার, কলোনি বাজার, খান্দার বাজার, কালিতলা বাজারের বিভিন্ন দোকান ও সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির বাজারে আগুন লেগেছে। আদায় লেগেছে আগুন, জিরার দাম অস্বাভাবিক। আর গত কয়েক দিন আগেও পেঁয়াজ এর দাম কিছুটা কম হলেও পেঁয়াজও এখন ঝাঁজ ছড়াচ্ছে কাচামরিচের ঝাল এখনও আকাশছোঁয়া। তেল-চিনি, মাছ-মাংসের দাম বাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পদের মসলার অস্বাভাবিক দাম লাগামহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধ্যের মধ্যে মিলছে না মাছ। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র একদিনের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ২৮০ টাকা কেজির কমে মিলছে না আদা। চীন থেকে আমদানি করা ভালোমানের আদার দাম উঠেছে কেজিপ্রতি ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। এ বছর চড়া দামের সবজির তালিকায় যোগ হয়েছে সচরাচর স্থিতিশীল থাকা আলুও। গত বছর এসময়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ১৮ থেকে ২৫ টাকা যা এই বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেটে আলু যেন কাঁচা সোনায় পরিনত হয়েছে।

সবজির পাশাপাশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছ ও মাংসের বাজার। হুট করে সব ধরনের মাছের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ৮০০ টাকা কেজির কমে কেনা যাচ্ছে না টেংরা, কই, শিং ও চিংড়ি মাছ। চাষের রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ কেজি দরে। দুই কেজি বা তারচেয়ে বড় হলে দাম কেজিতে আরও ১০০-২০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এমনকি ছোট আকারের পাঙাশ-তেলাপিয়া মাছের দামও এখন কেজিপ্রতি ২৪০-২৫০ টাকা। যা স্বাভাবিক সময়ে ২০০ টাকা কেজি বা তারও কমে পাওয়া যেতো। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা ডজন। গরুর মাংসের দাম পর পর দুই দফা বেড়ে এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।

বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারে আসা এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার দিনটিও যে ভালো-মন্দ খাবো সে উপায় নেই। নিরামিষ খেতে খেতে জীবন ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। মাছ কিনতে যদি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি লাগে, তাহলে অন্য সদাই না কিনে ঘরে ফিরতে হয় বিক্রেতারা এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আমদানি বন্ধ ও নানা ধরনের সংকটের কথা বললেও ক্রেতারা তা মেনে নিতে নারাজ। আমিষের চাহিদা পূরণে গরিব ও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষে ব্রয়লার মুরগি ও পাঙ্গাস-তেলাপিয়া মাছের ওপর বেশি নির্ভরশীল। মাছ-মাংসসহ নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে সীমিত আয়ের মানুষ বাজারে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে খুচরা ও পাইকারি কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বগুড়ার বিভিন্ন হাট বাজার থেকে আমাদের কাঁচা সবজি সংগ্রহ করতে হয় এসব হাট বাজারগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত খাজনা আদায়ের ফলে কাঁচা সবজির অনেকটা দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এইসব হাটবাজারে যদি তদারকি করা যেত তাহলে কিছুটা কমে কাঁচা সবজি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হতো আমাদের পক্ষে।

ফতেহ আলী বাজারের মাছ বিক্রেতারা জানান, সবকিছুর দাম বাড়তি কারণে বেড়েছে মাছের দাম। মাছের ফিডের (খাবার) এখন খুব চড়া দাম কিনতে হচ্ছে খামারিদের এজন্য দাম বাড়িয়ে দিয়েছে খামারিরা তাই আমাদেরকেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD