July 27, 2024, 2:34 am

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস আজ

যমুনা নিউজ বিডিঃ আজ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। এবার ‘বিনিয়োগে অগ্রাধিকার, কন্যাশিশুর অধিকার’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩ ।

দিবসটি উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ৩০ সেপ্টেম্বর কন্যাশিশু দিবস উদযাপনে কর্মসূচি গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয়ে করে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপনের কর্মসূচি গ্রহণ ও প্রতিপাদ্য বিষয়টি ব্যাপক প্রচারের অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর।

২০০৩ সালে কন্যাশিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৩০ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ঘোষণা করা হয়।

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, দেশকে সমৃদ্ধির সুউচ্চ শিখরে পৌঁছাতে একটি সুস্থ, সুন্দর, শিক্ষিত প্রজন্ম অপরিহার্য। সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময় থেকে শুরু করে শিশুদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আজকের কন্যাশিশুর মধ্যেই সুপ্তভাবে বিরাজ করছে আগামী দিনের আদর্শ মা। তাই কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রণয়ন করেছে বিভিন্ন আইন ও সুরক্ষা কার্যক্রম। ভবিষ্যৎ সুস্থ প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে কন্যাশিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। উপবৃত্তির সুযোগসহ যুগোপযোগী শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষাকে পাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সমাজ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে কন্যাশিশুদের সম্পৃক্ত করায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ের কন্যাশিশুরা শিক্ষিত ও নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারি-বেসরকারি নানা পদক্ষেপের কারণে দেশে কন্যাশিশুদের শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের হার কমে এসেছে। কন্যাশিশুরা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে ঈর্ষণীয় সফলতা প্রদর্শন করছে। এছাড়া তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে জেন্ডার সমতায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে কন্যাশিশু। নারী ও কন্যাশিশুর মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন জেন্ডার সমতায় সারা বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তাই কন্যাশিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকার লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের সুদক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আসছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নারী ও কন্যাশিশুদের উন্নয়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে জেন্ডার সম্পৃক্ত বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৭ শত ৮৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং জিডিপি’র ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। বাজেটে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও ১৭টি বিভাগের জন্য পৃথক জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে, যা নারী ও কন্যাশিশুদের সার্বিক অধিকার রক্ষায় ব্যবহৃত হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কন্যাশিশুদের কল্যাণে অবৈতনিক শিক্ষার প্রচলন, উপবৃত্তি প্রবর্তন, বিনামূল্যে বই বিতরণ, নারী শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করেছি। জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধিত) আইন-২০২০ এবং যুগোপযোগী বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আমাদের গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে বিদ্যালয়ে ছাত্রী ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাল্যবিবাহ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনেও আমাদের মেয়েরা ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রদর্শন করছে। এর মূল কারণ কন্যাশিশুর প্রতিভা বিকাশে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি, তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পৃষ্ঠপোষকতা।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহে ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছরের ১১ অক্টোবর পালিত হয় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। এদিকে প্রতিবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শিশু সপ্তাহ পালন করা হয়। এই শিশু সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস হিসাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD