July 27, 2024, 3:32 am

নওগাঁয় বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েক গ্রাম প্লাবিত

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর রাণীনগরে ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি ও মালঞ্চি-কৃষ্ণপুর দুই স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার ভোর রাতে বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। এতে প্লাবিত হয়েছে ওই এলাকা। তিন গ্রামের আনুমানিক ৯শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ। ডুবেছে কয়েকটি মাঠের হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল। চরম বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ছোট যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে আতঙ্কে ছিলেন বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। এরই মধ্যে বুধবার ভোররাতে উপজেলার গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি মাদ্রাসা সংলগ্ন এবং মালঞ্চি-কৃষ্ণপুর ভাটা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। ফলে প্লাবিত হয় বেড়িবাঁধ এলাকার তিন গ্রাম নান্দাইবাড়ি, মালঞ্চি ও কৃষ্ণপুর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পানিবন্দি হয়ে পড়েন ওই এলাকার মানুষ। ভেসে যায় অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ। ডুবে গেছে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল। মাঠে থাকা কাঁচা মরিচ, পটল, সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে এভাবে প্রবাহিত হতে থাকলে রাণীনগর-আত্রাই মেইন সড়কের কয়েকটি স্থানে পাকা সড়কও ভাঙার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরই এই বেড়িবাঁধ ভাঙে। নামমাত্র মেরামত করা হয়। এতে প্রতি বছরই তিন গ্রামের মানুষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন। গত বছর এবং তার আগের বছর বেড়িবাঁধ ভাঙলে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নান্দাইবাড়ি-মালঞ্চি ও কৃষ্ণপুর এলাকায় মেরামত করা হয়। কিন্তু সঠিকভাবে মেরামত কাজ না হওয়ায় এবারও বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্রতি বছর ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। বস্তাভর্তি বালু দিয়ে বেড়িবাঁধ মেরামত না করে সিসি ব্লকের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ মেরামত করা হলে তারা বন্যা থেকে রক্ষা পাবেন বলে জানান।

নান্দাইবাড়ি গ্রামের ফারুক বলেন, ‘সকাল হওয়ার আগেই আমার ঘরের ভেতর হাঁটু পানি হয়ে যায়। পুকুরে গিয়ে দেখি সব মাছ ভেসে গেছে। এতে আমার প্রায় লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।’

একই এলাকার এছাহক আলী জানান, বেড়িবাঁধে ভাঙনের কারণে তার দুটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। প্লাবিত হয়েছে ফসল, সবজির ক্ষেতসহ বাড়িঘর।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বেড়িবাঁধের আর কোথাও যেন নতুন করে ভেঙে না যায় সেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা নিয়ে ভেঙে যাওয়া অংশে বালির বস্তা ফেলে বন্ধ করার কার্যক্রম চলছে।’

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, ‘ভেঙে যাওয়া অংশগুলো আমরা উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে জিওব্যাগের মাধ্যমে মেরামতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে আরও কয়েকদিন নদীতে পানি বাড়তে পারে। নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD