September 26, 2023, 6:49 am
বানেশ্বর প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বানেশ্বরে ক্রেতা বিক্রেতার উপস্থিতিতে প্রতিদিন বাড়ছে জমজমাট আমের বাজার। ভোর থেকে দিনের প্রায় সব সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে আম। নানা জাতের আম আর স্বাদ ও মানের ভিন্নতা রেখে দাম ধরছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাইকাররা বড় আড়ৎ তৈরি করছেন।
জানা গেছে, আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং এর দেয়া ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশিক সময়সূচি অনুযায়ী, ১৫ মে গোপালভোগ, লক্ষণভোগ ও রানি পছন্দ ২০ মে আর হিমসাগর ২৫ মে থেকে বাজারে উঠেছে। অন্যদিকে ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১০ জুনে আম্রপালী ও ১৫ জুন থেকে ফজলি আর আগামী ১০ জুলাই থেকে বারি-৪ ও আশ্বিনা বাজারজাত করা হবে। তবে ইলামতি জাতের আম ২০ আগস্ট বাজারে আসতে পারে। এছাড়াও কাটিমন ও বারি-১১ সারা বছরই বাজারজাত করা যাবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে গাছে আম রাখা যাচ্ছে না। অল্প সময়েই পেঁকে যাচ্ছে বেশির ভাগ আম। আর এ অবস্থায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠানো হচ্ছে অনেক ঝুঁকিতে। ইতোমধ্যে আম অতিরিক্ত পাকা হওয়ার কারণে দূরের জেলায় পাঠানো সমস্যা হয়ে পড়েছে। পরিবেশ অনুকূলে না থাকলে এবার আম বেশি দিন রাখা যাবে না।
ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন, রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের বাজার বানেশ্বরে গোপালভোগ আম আকার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা দরে। এছাড়াও লক্ষণভোগ বা লখনা সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা, হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা মণ আর রানি ও গুটি জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৯শ টাকা থেকে ১৪শ টাকা মণ দরে।
তবে বিক্রেতারা আরও জানিয়েছেন, এবার অনলাইন ও ফেসবুকের মাধ্যমে বেশির আম বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে বাজারে অনেক আম আসার আগেই বাগান থেকেই বিক্রি হচ্ছে।
তবে ভোক্তারা বলছেন, বাড়তি দাম নেয়া হচ্ছে নানা অজুহাত দেখিয়ে। আর মধ্যস্বত্বভোগী, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ি বেশি লাভ করছেন বলেও জানিয়েছেন এসব ভোক্তারা।
আম ব্যবসায়ি মোঃ মজিবর রহমান জানিয়েছেন, এবার বানেশ্বর বাজারে তুলনামূলক আমদানী স্বাভাবিক আছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ির কারণে দামের একটা বড় পার্থক্য রয়েছে। এরপর বানেশ্বরের তুলনায় রাজশাহীর অন্যান্য বাজারে কিছুটা হালেও দাম বেশি।
এছাড়াও পাইকাররা জানান, এবার রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি নওগাঁর বেশির এলাকায় আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। যার ফলে কিছুটা হলেও বানেশ্বরসহ রাজশাহীর অন্যান্য ছোট-বড় বাজারে প্রভাব পড়েছে।
পাইকারী ব্যবসায়ি মোঃ ইয়াসিন আলী জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আমের বাজার কিছুটা হলেও কমবে। এখন পুরো মৌসুম শুরু হয়েছে। আর অতিরিক্ত গরমের কারণে কেউ বাগানে আম রাখতে পারবে না, ফলে বিক্রি করতেই হবে।
বাগান মালিকেরা জানান, ফলন বেশ ভালো হলেও পাইকার ও সিন্ডিকেটের কারণে অনেক আম বাগান মালিক ক্ষতির মুখে পড়বে। কম দামে বাগান কিনে কয়েক হাত বদল করে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সেই একই বাগান।