September 23, 2023, 5:44 pm

বগুড়ায় সমতলে কাজুবাদাম চাষ, আগ্রহী হচ্ছেন কৃষক

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ পাহাড়ি ফসল কাজুবাদামের চাষ হচ্ছে বগুড়ার সমতল ভূমিতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কাজুবাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। চারা লাগানোর এক বছরের মাথায় গাছে গাছে ঝুলছে কাজুবাদাম।

এদিকে কৃষকেরা বলছেন, বগুড়ার মাটিতে অপ্রচলিত কৃষিপণ্যটির চাষাবাদ শুরু হলেও এখনো তৈরি হয়নি বাণিজ্যিক বাজার। কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাতের কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারখানাও নেই এই অঞ্চলে। এতে করে চাষাবাদ আরও বাড়লে খেতের কাজুবাদাম বিক্রি নিয়ে সংকট দেখা দিতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অনাবাদি বা পতিত জমিতে কাজুবাদাম চাষের সম্ভাবনা দেখে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজুবাদামের আবাদ বাড়াতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিচ্ছে। বগুড়ার শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় কাজুবাদাম ও কফি চাষ গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকজন কৃষক কাজুবাদামের বাগান করেছেন।

প্রথমবারের মতো বাগানের গাছে গাছে ফুল এসেছে, কাজুবাদামও ধরেছে। গাছ থেকে কাজুবাদাম তোলাও শুরু হয়েছে। তবে এসব কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত কারখানা না থাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বেচাকেনা এখনো শুরু হয়নি। বাগান থেকে তোলা কাজুবাদাম তুলে পাড়াপ্রতিবেশীর মধ্যেও বিতরণও করছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান বলেন, অপ্রচলিত কৃষিপণ্য কাজুবাদাম পাহাড়ি ফসল হিসেবেই বেশি পরিচিত। কৃষিপণ্য বহুমুখীকরণের যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে, তাতে কাজুবাদামকে সম্ভাবনাময় ফসল হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সমতলভূমিতে কাজুবাদামের বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষাবাদের জন্য বগুড়ার ১২টি উপজেলার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকজন কৃষককে প্রশিক্ষণ ও চারা সরবরাহ করা হয়েছে। প্রথম বছর গাছে গাছে মুকুল ধরলেও ফল ধরেছে কিছুটা কম। তবে শাজাহানপুর উপজেলায় একজন কৃষকের বাগানে কাজুবাদামের ভালো ফলন হয়েছে। অনেকেই কাজুবাদাম চাষে আগ্রহের কথা জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করছেন।

সম্প্রতি শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জলাবদ্ধ পতিত জমিতে মাটি ভরাট করে কাজুবাদামের বাগান গড়েছেন মোতাছিম বিল্লাহ। কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ২০২১ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তাঁকে ৮০টি কাজুবাদামের কলম চারা সরবরাহ করা হয়। গতবছর গাছে গাছে মুকুল ধরলেও ফল উৎপাদন হয়েছে কম। তবে এবার গাছে গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। ইতিমধ্যে বাগান থেকে বেশকিছু ফল তোলাও হয়েছে।

মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, এম-২৩ জাতের কাজুবাদামের ৮০টি কলম চারা ৫০ শতাংশ জমিতে রোপন করেছিলেন। এর মধ্যে ৬০টি চারা টিকে যায় এবং দ্রুত বাড়তে থাকে। গত বছর গাছে গাছে কাজুবাদামের মুকুল ধরে, তবে ফল ধরেনি। এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে গাছে গাছে প্রচুর মুকুল আসে। এপ্রিল থেকে কাজুবাদাম উৎপাদন শুরু হয়।

মোতাছিম বিল্লাহর কাজুবাদামের বাগান দেখতে প্রতিদিনই লোকজন ভিড় করছেন। অনেকেই বাণিজ্যিকভিত্তিতে কাজুবাদাম চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেকেই কাজুবাদাম কেনার আগ্রহের কথা জানাচ্ছেন।

প্রতি কেজি কাজুবাদাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হলে ভালো লাভ হবে। কারণ, বছরে ৮ মাসই বাগান থেকে কাজুবাদাম উৎপাদন হয়। আগামী মৌসুম থেকে বাগানে প্রচুর পরিমাণ কাজুবাদাম উৎপাদন হবে। তবে এই অঞ্চলে কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত কারখানা নেই। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপন করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD