October 13, 2024, 1:28 am
শাজাহানপুর প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দাবি করছেন অভিযুক্তরা।
গাছ বিক্রির ঘটনায় রোববার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য দাবি করা আব্দুল লতিফ। এর আগে, গত শুক্রবার ছয়টি গাছ কেটে বিক্রি করা হয়।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম আলী ইমাম ইনোকি। আর প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষের নাম মোতাহার হোসেন। তাদের মধ্যে ইনোকি নিজেকে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে দাবি করছে। তিনি শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি।
লিখিত ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, ইনোকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি। এরপরেও অধ্যক্ষ মোতাহারের সঙ্গে যোগসাজস করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কেটে বিক্রি করেন। শুক্রবার ছুটির দিনে ইনোকি ও মোতাহার বিদ্যালয়ে ছয়টি গাছ চুরি করে কেটে বিক্রি করেন। গাছ বিক্রির বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কাউকে কিছুই জানানো হয়নি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যুবলীগ নেতা ইনোকি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি। তবে ইনোকি দাবি করেন তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তার স্বাক্ষরেই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হয়।
এ বিষয়ে আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের ছয়টি বেলজিয়াম গাছ অধ্যক্ষ ও সাবেক সভাপতি যোগসাজস করে প্রায় এক লাখ টাকায় বিক্রি করেন। শুক্রবার সকালে গাছগুলো কেটে নিয়ে যান ক্রেতারা। এ বিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি।
জানতে চাইলে আলী ইমাম ইনোকি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি বেলজিয়াম ও বাকি পাঁচটি শিশুগাছ ছিল। সবগুলো গাছই মরা ও শুকনো ছিল।
ইনোকি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা অভিযোগে বলা হয়েছে আমি সাবেক সভাপতি। অভিযোগকারী দাবি করছেন তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য। তিনি (আব্দুল লতিফ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলেও এখনো ওই কমিটি অনুমোদন পায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ১০-১১ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। গাছ কাটা হয়েছে শুক্রবার। অবশ্য সেগুলো কেটে নেয়ার বিষয়ে আমাদের রেজুলেশন করা ছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবু তালেব নামের এক কর্মচারীর বেতন-ভাতা হয় না। ওই গাছগুলো তাকে দেওয়া হয়েছে।’
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন বলেন, ‘ছয়টি মরা গাছ ছিল, সেগুলো আমাদের দপ্তরি আবু তালেবকে দেওয়া হয়েছে। আবু তালেব এখনো বেতনভূক্ত হননি। এ কারণে তাকে বলা হয় যে, সে গাছগুলো নিয়ে যাক। একই সঙ্গে কিছু খড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রেখে দিতে বলা হয়। এছাড়াও মরা গাছগুলো ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলো যেকোনো সময় শিক্ষার্থীদের ওপর উপড়ে পড়তো। সবদিক বিবেচনা করেই গাছগুলো আবু তালেবকে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগকারী আব্দুল লতিফ দাবি করছেন যে, তিনি গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য। অথচ তাদের কমিটি অনুমোদন পায়নি। বর্তমানে গভর্নিং বডির আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আলী ইমাম ইনোকি। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গাছ কাটার অভিযোগ করা হয়েছে।’
জানতে চাইলে ইউএনও সাইদা খানম বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ এখনো হাতে পাইনি। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’