April 20, 2024, 7:05 am

বগুড়ায় আলু রোপনে ব্যস্ত কৃষকরা

যমুনা নিউজ বিডিঃ শীতের প্রায় সবজি বাজারে দেখা গেলেও নতুন আলু দেখা যায়নি। মাঠে মাঠে আলু চাষিরা জমি তৈরি করে বীজ রোপন শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দিগুণ ফলন পাবে চাষিরা। দিগুণ ফলনের আশায় চাষিরা এখন জমিতে সময় দিচ্ছেন। চলতি বছর বগুড়ায় সাড়ে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর ফলন ধরা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন।

আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবছর আলু বীজের দাম বেশি হলেও সংকট নেই। তবে সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। ফলে বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ বেড়ে গড়ে তা’ ১০ থেকে ১৩ হাজারে দাঁড়াবে। আগাম বাদ দিয়ে পুর্ণ মেয়াদে ৬০ থেকে ৭০ দিনে এই আলু তুললে বিঘা প্রতি সর্ব্বোচ ৮০ মন আলু পাওয়া যাবে। কোন কোন জমিতে আবার ৭০ মণ আলু পাওয়া যেতে পারে।

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিনের আলু চাষিরা জমি তৈরী করে বীজ রোপণ করছে। মাঠে মাঠ আলু চাষিরা চাষ দিয়ে জমি তৈরী করার পর বেড বেঁধে নিচ্ছে। কোথাও কোথাও আলু চাষিরা বীজ রোপণ করে বেড তৈরী করে দিচ্ছে। আর আগামজাতের আলু চাষিরা আলু আবাদ করে ফলনের দিকে তাকিয়ে আছে।

বগুড়ার সদর উপজেলার ঘোড়াধাপ বন্দর এলাকার আলু চাষি খোকন হোসেন জানান, খোলা বাজারে এখনো আলুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ টাকা কেজি। বাজারে এখনো আলুর দাম কম। নতুন আলু চাষের পর বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে একই দাম থাকলে খুব বেশি আয় করা যাবে না। চাষের পর ভালো আলু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও দাম নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বাজারে এখন বীজ আলু পাওয়া যাচ্ছে। বীজ আলু সংগ্রহ করে চাষিরা জমিতে রোপণ শুরু করেছে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারি কৃষি অফিসার ফরিদ হোসেন জানান, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৭১০ হেক্টর জমিতে আগামজাতের আলু চাষ হয়েছে। এই আলু আগামী কয়েকদিন পর বাজারে উঠবে। নতুন আলু দিয়েই নবান্ন অনুষ্ঠান হবে। মৌসুমের শুরুতে নবান্নকে ঘিরে কৃষকরা আগাম আলু চাষ করে থাকে। নতুন আলু বাজারে উঠলে হিমাগারের পুরাতন আলুর কদর থাকেনা। তাই অধিক লোকসান ঠেকাতে হিমাগারের আলু তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দেয়। চলতি বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৬৯০ হেক্টর। আর ফলন পাওয়া যাবে ১২ লাখ ২০ হাজার ১৮ মেট্রিক টন। বৃষ্টিপাত না হলে আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে শেষ পর্যন্ত ফলন বেড়ে যেতে পারে। গত বছর প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধরা হলেও সেখানে শেষ পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয় ১৩ লাখ মেট্রিক টন। আশা করা হচ্ছে চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু উৎপাদন হবে। এখন পর্যন্ত চাষি পর্যায়ে যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জিত হবে। বগুড়া ও তার আশপাশের জেলায় যে পরিমান আলু উৎপাদন হয়ে থাকে তা বিদেশের বাজারে দিতে পারলে একটি আলুও অবিক্রীত থাকবে না এবং সেই সঙ্গে বগুড়ার চাষিরা আলুর দামও পাবে ভালো।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা জানান, আগাম জাতের আলু চাষ করে ভালো দাম পাওয়া যায় বলে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। অক্টোবর মাসে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে আলুর ক্ষেত কিছু নষ্ট হয়েছে। সে কারণে আগাম জাতের আলুর ফলন কমে যাবে। তবে মূল আলু চাষের আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছে। আমন ধান কাটার পর পুরোপুরি ভাবে আলু চাষ শুরু হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD