April 25, 2024, 1:43 pm

৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় হাইকোর্টে দুদকের প্রতিবেদন

যমুনা নিউজ বিডিঃ ৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদকের নেওয়া পদক্ষেপ গ্রহণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং অডিট ফার্মগুলোর সংশ্লিষ্টতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে অর্থ আত্মসাৎ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরীর নামে পৃথকভাবে সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তবে সাবেক তথ্য সচিব মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ বা মামলা সংক্রান্ত অনুসন্ধানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আইএলএফএসএল এর কর্মকর্তা ও বোর্ড সদস্যদের জামানতবিহীন ঋণ মঞ্জুর করে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিভিন্ন কোম্পানির নামে স্থানান্তর ও উত্তোলন করে ১৪শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২২টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ৬টি মামলা রয়েছে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের। এসব মামলার তদন্ত চলছে। এছাড়া আরও ২৭ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ অর্জন বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান শেষে মামলা করা হবে। এছাড়া পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলার বিচার চলছে।

পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের এখন পর্যন্ত ১৭৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি, ৪টি ফ্ল্যাট, ২০ হাজার বর্গফুটের একটি ভবন অবরুদ্ধ করেছে দুদক। যার বাজার মূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন মডেলের ২২টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এর বাইরে আইএলএফএসএল এর অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে মোট ৩৪টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর বর্তমানে বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শাখা থেকে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে এসকে সুরের বিরুদ্ধে বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শাখায় পাওয়া একটি অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। এছাড়া বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লি. এর সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মান্নানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের ২টি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

‘৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটে দায়ী পাঁচ ডেপুটি গভর্নর’- শিরোনামে একটি দৈনিকে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে ‘অবৈধভাবে’ জামানতবিহীন ঋণ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইএলএফএসএল থেকে শুধু ভারতে কারাবন্দি প্রশান্ত কুমার হালদার এবং তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেই নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। বিআইএফসি থেকে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে গেছে ৬০০ কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে এই লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ ছিলেন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD