April 26, 2024, 10:31 am

সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তীর স্মরণসভা ও সন্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়া-৫ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব হাবিবর রহমান বলেছেন- সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার বিকাশ দেশের স্বার্থেই প্রয়োজন। সেই সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যাঁরা হত্যাকান্ডের শিকার বা যারা হামলার শিকার হন তাদের পাশে দাঁড়ানো ও আইনী সহায়তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বর্তমান সরকার সেই বিষয়ে আন্তরিক। সাংবাদিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ইতিমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে হতাশাজনক বিষয় হলো বগুড়ায় কর্মরত অবস্থায় জোট সরকারের সময় নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তীর মামলাটির ঘটনা। দীর্ঘদিন এই মামলা ফাইল চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিলো, পরবর্তীতে তিন বছর আগে জঙ্গি হামলার সম্পৃক্ততা দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। কিন্তু তাঁর পরিবার বা সহকর্মি কেউ এতে সন্তুষ্ট নন। যেহেতু অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছেন, এখন আইনী প্রক্রিয়া মেনে তা অধিকতর তদন্ত করা যায় কি-না সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তী হত্যাকান্ডের ১৮ বছর উপলক্ষে স্মরণসভা ও স্মৃতি পদক প্রদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিইউজে) স্মরণসভা ও স্মৃতি পদক প্রদান কর্মসূচির আয়োজন করে। বগুড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিইউজে সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জে এম রউফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) উজ্জ্বল কুমার ঘোষ, দৈনিক করতোয়া’র সম্পাদক মোজাম্মেল হক লালু, বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি ও বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন ও বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য্য শংকর। বক্তব্য রাখেন প্রয়াত সাংবাদিকের ছেলে অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী, আরিফ রেহমান, মুরশিদ আলম, মাসুদুর রহমান রানা প্রমুখ। স্মরণসভা শেষে সাংবাদিকতায় দীপঙ্কর চক্রবর্তী স্মৃতিপদক প্রদান করা হয়। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বগুড়ায় কর্মরত তিন সাংবাদিক এবার স্মৃতিপদক পেয়েছেন। তাঁরা হলেন দৈনিক জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার ও বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন, দৈনিক ইত্তেফাকের নিজস্ব প্রতিবেদক মিলন রহমান ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটো সাংবাদিক ঠান্ডা আজাদ। অতিথিবৃন্দ উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে তাঁদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২ অক্টোবর সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তী নিজ কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে বাড়ির সন্নিকটে খুন হন। সেসময় তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত দুর্জয় বাংলা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি ছিলেন। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে পার্থ সারথী চক্রবর্তী বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তিন দফা ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বাদির নারাজির প্রেক্ষিতে মামলা ঘুরে ডিবিতে আসার পর ২০১৭ সালের ৭মার্চ বগুড়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান জঙ্গি হামলায় দীপঙ্কর চক্রবর্তী খুন হয়েছেন।পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জঙ্গি রাজীব গান্ধী ৬ মার্চ বগুড়ার বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সেই খুনের দায় স্বীকার করেছে।জবানবন্দিতে রাজীব নিজেসহ চার জঙ্গি হত্যাকান্ডে অংশ নেয়ার কথা উল্লেখ করে। অপর তিন জঙ্গি হলো সারওয়ার জাহান মানিক, সানাউল্লাহ ও নুরুল্লাহ। পরে তাদের নামে পুলিশ অভিযোগ পত্র দাখিল করে। ওই হত্যাকান্ডের পর থেকেই বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়ন লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিগত ২০১৯ সাল থেকে স্মৃতিপদক প্রদান করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD