April 23, 2024, 10:29 am

ইউরোপে খরায় ৫০০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

যমুনা নিউজ বিডিঃ  ভয়াবহ খরার কবলে ইউরোপ মহাদেশ। এ খরা এতটাই তীব্র যে সেটিকে সম্ভবত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।  বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের দুই-তৃতীয়াংশ এক ধরনের খরা সতর্কতার মধ্যে রয়েছে, যা সম্ভবত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা। গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ মহাদেশের ৪৭ শতাংশ এলাকা ‘সতর্কতা’ অবস্থায় রয়েছে, যার অর্থ সেখানকার মাটি শুকিয়ে গেছে।

এ ছাড়া ইউরোপের আরও ১৭ শতাংশ এলাকাও একটি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে – যার অর্থ সেখানকার গাছপালা স্ট্রেসের (চাপের) মধ্যে রয়েছে বলে লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, শুষ্ক এই মৌসুম ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অঞ্চলে আরও কয়েক মাস স্থায়ী হতে পারে। যার ফলে সেখানে ফসলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আরও দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। বিবিসি বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় চলতি বছর ইউরোপে ভুট্টার ফলন ১৬ শতাংশ, সয়াবিনের ফলন ১৫ শতাংশ এবং সূর্যমুখীর ফলন ১২ শতাংশ কম হয়েছে। খরা পর্যবেক্ষক এই কেন্দ্রটি ইউরোপীয় কমিশনের গবেষণা শাখার অংশ। গ্লোবাল ড্রাউট অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় কমিশন সতর্ক করে দিয়েছে, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় ‘এখন পর্যন্ত বর্তমান খরা অন্তত গত ৫০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বলে মনে হচ্ছে’। রিসার্চ কমিশনার মারিয়া গ্যাব্রিয়েল বলেছেন, চলমান তাপপ্রবাহ এবং পানির ঘাটতি পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) পানির স্তরের ওপর অভূতপূর্ব চাপ সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, গড় হিসাবের চেয়ে বাস্তবসম্মত ভাবে আমরা বর্তমানে দীর্ঘায়িত দাবানলের মৌসুম লক্ষ্য করছি এবং ফসল উৎপাদনের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবও লক্ষ্য করছি। প্রতি বছর জলবায়ু পরিবর্তন নিঃসন্দেহে আরও বেশি লক্ষণীয় হয়ে উঠছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, ইউরোপের প্রায় সব নদীই কিছুটা হলেও শুকিয়ে গেছে। নৌকার ওপর সুস্পষ্ট প্রভাব ছাড়াও শুকিয়ে যাওয়া নদীগুলোও জ্বালানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। (রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে) এই খাতটি ইতোমধ্যেই সংকটে রয়েছে। এ ছাড়া জলবিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, সারা বছরই ইউরোপের অনকে জায়গাতেই ‘তীব্র খরা’ চলছিল। কিন্তু চলতি ‘আগস্ট মাসের শুরু থেকে সেই খরা আরও বেশি জায়গায় প্রসারিত হচ্ছে এবং খারাপ রূপ ধারণ’ করছে। কমপক্ষে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত চলমান এই খরা ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগর অঞ্চল বরাবর স্থায়ী হতে পারে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, উত্তর সার্বিয়া, ইউক্রেন, মলদোভা, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশগুলোয় খরা পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

অবশ্য চলমান এই খরার প্রভাবে ইউরোপের শক্তিশালী দানিয়ুব নদীর পানিও গত প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরগুলোর একটিতে পৌঁছেছে। এতে করে সম্প্রতি একে একে ফের জেগে উঠতে শুরু করেছে জার্মানির ডুবে যাওয়া বহু যুদ্ধজাহাজ। এসব জার্মান যুদ্ধজাহাজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডুবে গিয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD