December 1, 2023, 10:37 pm
শেরপুর প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া নদী থেকে সামাম তাহমিদ ও সাব্বির আহমেদ শিশির নামের দুই বন্ধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজনের লাশ সকালে এবং অপরজনের লাশ দুপুরে উদ্ধার করা হয়। মৃত দুজনই গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেনিখোঁজ ছিলেন।
মৃত সামাম তাহমিদ (১৮) উপজেলার বারোদুয়ারি পাড়া গ্রামের মোজাফফর রহমানের ছেলে এবং শেরুট স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। অপরজন সাব্বির আহমেদ শিশির গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর জামতলা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে এবং বগুড়া ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, সকাল থেকে ধরমোকামপূর্ব পাড়া এলাকার করতোয়া নদীর পাড়ে স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধ পেতে শুরু করেন। এরপর তারা দুর্গন্ধের কারণ অনুসন্ধানে নদীর পাড়ে গেলে নদীতে একটি লাশ ভাসতে দেখে। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে এসে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের পরনে একটি কালো টি শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা ছিল। পরে একই দুপুর দেড়টায় উপজেলার গোপালপুর এলাকার করতোয়া নদীতে সাব্বিরের লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
মৃত সাব্বিরের বাবা লুৎফর রহমান জানান, গতকাল সকাল থেকে তার ছেলে ছিল। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যাচ্ছিলো না। বিকেল ৩টার পর আবারও তার মোবাইলে ফোন দিলে একজন ১০-১২ বছরের এক শিশু ফোন রিসিভ করে। তখন মুঠোফোনে তাকে জানানো হয় মোবাইল ফোনটি সে আলিয়া মাদ্রাসা’র পেছনে নদীর ধারে পেয়েছে। এরপর তিনি তাকে মোবাইলটি নিয়ে আসতে বলে তার কাছে শিশুটি মোবাইল ফোনটি পৌঁছে দেয়। এরপর তিনি তার ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় মাধারণ ডায়েরি করেন।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি তারা দু’জন বন্ধু। এবং দু’জনেই পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিলো। তারা দু’জনে বৃহস্পতিবার ( ৭ জুলাই) বগুড়া শহরে গিয়েছিলো। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া থেকে সামামের বাসায় গিয়ে রাতযাপন করে একসাথে। পরে সকাল ৭টার দিকে তারা দু’জনে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তার বাড়ির দোকানের মোড়ের একটি দোকান থেকে কোল্ড ড্রিংকস কিনে সামাম তার মাকে ফোন দিয়ে সেটার দাম দিতে বলে। কিন্তু সামামের মা সেটা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে তোর কাছে তো টাকা আছেই। তখন সামাম তার মাকে বলে ঠিক আছে তোমাকে আর কোনদিন টাকা দিতে হবে না এই বলে সে ফোন রেখে দেয়।
তিনি আরও জানান, সাব্বিরও তার পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল। কিন্তু তার পরিবার তাকে দেয়নি।
ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, লাশ দুটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। এরপরেও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে দু’জনের লাশ পোস্ট মর্টেমের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।