April 19, 2024, 12:55 pm

করোনা মহামারী, সুপার সাইক্লোন আম্পানের তান্ডব মোকাবেলায় সফলতা দ্য গার্ডিয়ানে লিখেছেন প্রধামন্ত্রী শেখহাসিনা

কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের মহামারী, আবার মরার উপর খাঁড়ার ঘা সুপার সাইক্লোন আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহন করে সফলভাবে মোকাবেলা করার গল্প দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট্রিক ভেরকুইজেনের সঙ্গে যৌথভাবে গার্ডিয়ানে লেখা নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মে মাসে ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন সময় নষ্ট করার সুযোগ ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়নি। তখন দেশের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়, কীভাবে ২৪ লাখ মানুষকে বড় বিপদ কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল থেকে রক্ষা করা যায়।
সবচেয়ে ভালো সময়েও জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়াই ছিল চ্যালেঞ্জের। ঘরবাড়ি অরক্ষিত রেখে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে রাজি হয় না। এবার এ চ্যালেঞ্জ ছিল আরও অনেক বেশি। ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছিল। উদ্ধারকর্মীদের নিশ্চিত করতে হয়েছিল যে, সরিয়ে নেয়ার এই প্রক্রিয়ায় ভাইরাস সংক্রমণ ঘটবে না।
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যমান চার হাজার ১৭১টি আশ্রয় কেন্দ্রের সঙ্গে আরও ১০ হাজার ৫০০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়। যাতে সেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে সবাইকে আশ্রয় দেয়া যায়। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ৭০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক উপকূলীয় এলাকায় তৎপরতা শুরু করে।
মাস্ক, পানি, সাবান ও স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়। বিদেশি রফতানির আদেশ বাতিল হওয়ায় ধুঁকতে থাকা তৈরি পোশাক শিল্প ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) তৈরির মধ্য দিয়ে আবার উৎপাদনে ফিরতে সক্ষম হয়।
নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহামারীর শীর্ষ ধাপে আম্পানের মতো একটি ঘূর্ণিঝড় জলবায়ু ও মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আন্তঃসম্পর্ককে সামনে নিয়ে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওসানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আটলান্টিক ও ক্যারিবিয়ানের পানির অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে চলতি বছর হারিকেনের মৌসুম রেকর্ড বইয়ে স্থান করে নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল ও ক্যারিবীয় অঞ্চলেও কোভিড-১৯ এর কারণে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া কঠিন হয়ে উঠবে।
উদ্ধার তৎপরতায় প্রারম্ভিক সাড়া দেয়ার জন্য ৫৫ হাজার কর্মী নিয়ে বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রস্তুতির কারণে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ভারত ও বাংলাদেশে ১০০ এর কম মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যদিও একজনের মৃত্যুও অত্যন্ত অনুতাপের, তারপরও পূর্ব-সতর্কতা ব্যবস্থা এবং যথাযথ উদ্ধার তৎপরতার অনুশীলন বছরের পর বছর হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।
অবকাঠামো পুনর্গঠন ও নতুনভাবে জীবন-যাত্রা শুরু করা ভিন্ন আরেক বিষয়। এর আগে অসংখ্যবার বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তা অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করার কথাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD