April 25, 2024, 7:41 am

সারিয়াকান্দিতে যমুনার চরে মানুষের দুর্ভোগ চরমে

সারিয়াকান্দী প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে। এখনো যমুনা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপরে রয়েছে।

যমুনা নদীর পানিতে সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর (আংশিক), কাজলা, কর্নিবাড়ী, বোহাইল ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা তলিয়ে গেছে। যমুনার ঢলে দিশেহারা চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আউচারপাড়া, উত্তর শিমুলতাইড়, চর দলিকা, হাটবাড়ী, খাটিয়ামারী, কাশিরপাড়া, সুজনেরপাড়া, চর নোয়ারপাড়া, বিরামের পাঁচগাছি, ভাঙ্গুরগাছা চরের হাজারও মানুষ। অনেকে বসতবাড়িতে উঁচু মাচান তৈরি করে সেখানে চাল-ডাল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

শুক্রবার দুপুর থেকে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করলেও এখনো চর এলাকার অর্ধেক বসতঘর কোমরপানিতে তলিয়ে আছে। উপজেলার চর দলিকা গ্রামের আজিজার শেখ বলেন, আট বিঘা জমির পাটের খেত আর তিন বিঘার আউশ ধান বন্যার পানিতে শেষ। এখন বসতভিটাও হুমকিতে। তিন দিন ধরে কিছু খাননি। ত্রাণও জোটেনি। স্রোতের তোড়ে কাবু আমির শেখ (৬০) বন্যা প্লাবিত বসতঘর ফেলে আশ্রয় নিয়েছেন চর দলিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে ঠাঁই হয়েছে তার মতো বানভাসি আরো ৩০-৩৫টি পরিবারের। আমির শেখ বলেন, ‘আট দিন ধরে পানির সঙ্গে লড়াই করছি। একবেলা ভাত, আরেকবেলা বিস্কুট-মুড়ি খেয়ে জীবন বাঁচাচ্ছি। প্রশাসন বা চেয়ারম্যান কাউন্সিলর কেউ চরে খোঁজ নিতে আসেনি।

খাটিয়ামারী চরের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের বসতঘর ছিল কাশিরপাড়া চরে। বছরখানেক আগে কাশিরপাড়া চর যমুনা গিলে খায়। সবাই ছন্নছাড়া। ৯-১০ পরিবার খাটিয়ামারী চরে এসে পরের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করছেন। সেই ঘরও যমুনার ঢলে ভেসে নিয়ে গেছে। খাটিয়ামারী চরের চেয়েও শোচনীয় অবস্থা চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের হাটবাড়ী ও দলিকার চরের। এই দুই চর এখন বানের পানিতে ভাসছে। অধিকাংশ বসতঘরে বুকসমান পানি। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে নৌকায়, টিনের চাল আর বাঁশের উঁচু মাচায়। চরের কোথাও শুকনা জায়গা নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, তিন উপজেলার মধ্যে সারিয়াকান্দিতে ৭১০ হেক্টর জমির ফসল, সোনাতলা উপজেলার ৯৬ হেক্টর ধুনট উপজেলার ২৮ হেক্টর ফসল পানিতে ডুবে যায়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় এ পর্যন্ত ৮৩টি গ্রামের ১১ হাজার ১৮০টি পরিবারের ৫৬ হাজার ৭২০ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। সারিয়াকান্দিসহ তিন উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ১৫ লাখ টাকা ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD