April 18, 2024, 3:50 pm

লালমনিরহাটে বন্যার আশঙ্কা; ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

যমুনা নিউজ বিডিঃ তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, সানিয়াজান ও স্বর্ণামতি নদীর পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাটের প্রায় দশ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রান্না ও টয়লেটসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নদী পাড়ের হাজার হাজর মানুষ। বন্যার্তদের জন্য ১৫০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

রোববার দুপুরে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এর আগে শনিবার রাতে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। গত কয়েকদিন থেকে জেলার সব নদীর পানি হৃাস বৃদ্ধির মধ্যে রয়েছে।

জানা যায়, ভারীবর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ৫ সেন্টি মিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী ও সদরের দশ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হাঁটু থেকে কোমর পানিতে বন্দি এসব লোকজন রান্না ও টয়লেট করতে পারছে না। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় চলাচলসহ স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে না পারায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। স্কুল কলেজ ডুবে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও পোষাপ্রাণী গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি নিয়েও অসহায় অবস্থায় রয়েছেন তিস্তা পাড়ের লোকজন।

জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শুকনো খাবারসহ নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। নদী ভাঙনে জিও ব্যাগ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউপির নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ,রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউপির তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হাতিবান্ধা ফকির পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন জানান, গত দুইদিন ধরে প্রায় ১০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা পাওয়া হয়নি।

আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মফিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার মহিষখোচা, দুর্গাপুর ইউপির পানিবন্দী লোকজনের তালিকা করে সাহায্য করা হচ্ছে। বন্যাদুর্গতদের সব সহযোগীতা অব্যাহত আছে।

ডিসি মো. আবু জাফর বলেন, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার তা বিতরণ ও শেষ হয়েছে। বন্যা কবলিত যেসব এলাকা আছে সেগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, গতকালের চেয়ে আজ তিস্তা ও ধরলার পানি বেড়ে বিপদসীমার লেবেল উঠা নামার মধ্যে রয়েছে। নদী ভাঙন রোধে বিভিন্ন জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD