May 19, 2024, 4:43 am

চুয়াডাঙ্গায় ৩৫৪ ভোটকেন্দ্রের ২০৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধ: তিন দিন পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ। দিনরাত প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থীরা। দুটি আসনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। অধিকাংশ ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগে আগ্রহ দেখাছেন। চুয়াডাঙ্গায় দুটি আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্য ৩৫৪টি। এরমধ্যে ২০৫টি কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

তবে জানা গেছে, সব শঙ্কা উড়িয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন ভোটাররা। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যদের দ্রুত পদক্ষেপ ও নিরপেক্ষতাহীনভাবে কাজ করায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অনেকটাই ভয়ভীতির শঙ্কা দূর হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৩৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যেই ২০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪৯টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। জেলায় সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে থাকছে সশস্ত্র বাহিনীর ২৯৫ সদস্যসহ র‍্যাব, আনসার, বিজিবি ও পুলিশের মোট ১ হাজার ১৪৬ জন আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সদস্যরা।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে লাঙল প্রতীকের (জাপা) মনোনীত দুজন প্রার্থী অনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে পাঁচজন ও ২ আসনে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, ফ্রিজ প্রতীকের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান, আম প্রতীকের ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুর রহমান।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী আলি আজগার টগর, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজা, ঢেঁকি প্রতীকের মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ, ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নুর হাকিম, ফ্রিজ প্রতীকের নজরুল ইসলাম মল্লিক, মশাল প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মো. ইয়াছিন উল্লাহ, গোলাপ ফুল প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী জেলা জাকের পার্টির সভাপতি আবদুল লতিফ খান এবং আম প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ (পিপিএম-সেবা) ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় ৩৫৪ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ২০৫ টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ছোটখাটো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আসামিদের গ্রেপ্তার করেছি। নির্বাচন সংক্রান্ত ঘটনা হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। ফৌজদারি অপরাধ হলে মামলা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যেগুলো প্রয়োজন আমরা সেটাই করছি। পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে।

চুয়াডাঙ্গা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে সুষ্ঠু-সুন্দর ও ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্মানিত ভোটাররা যেন নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। নিরাপত্তা নিয়ে কারোর মধ্যে কোনো ধরনের শঙ্কা তৈরি না হয় পুলিশ যথেষ্ঠ সতর্ক আছে। আমরাও সবাইকে আশ্বস্ত করছি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ছোটখাটো যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সেগুলো দ্রুত পুলিশ পক্ষ থেকে রেসপন্স করা হয়েছে, মামলা হয়েছে এবং আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এগুলো আইনানুগভাবেই নিষ্পত্তি হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD