October 14, 2024, 6:22 am
যমুনা নিউজ বিডিঃ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় অসাংবিধানিক শব্দ ‘সাংসদ’ ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় বিচারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছেন কয়েকজন আইনজীবী।
আজ সোমবার ল’অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার ও ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের রিটটি দায়ের করেন।
রিটে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, আইন সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে বলা হয়েছে, সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে ‘জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি স্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা, ইহার সংরক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য।’ অনুচ্ছেদ ২১ অনুযায়ী সংবিধান ও আইন মান্য করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সর্বমোট ৩৫০ জন সংসদ সদস্যের সমন্বয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদেরকে ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে অভিহিত করতে হবে। ইহা একটি সাংবিধানিক পদ এবং সংসদ সদস্যদের অন্য কোন নামে সম্বোধন করা অসাংবিধানিক।’
কিন্তু বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা দীর্ঘদিন যাবৎ ‘সংসদ সদস্য’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার করে আসছে। এটি বাংলাদেশ সংবিধানের চরম লঙ্ঘন, অবমাননা এবং চরম ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই না। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার কর্তৃক রুলিং জারি করে বলা হয়েছে ‘সংসদ সদস্য’ একটি সাংবিধানিক পদ এবং ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ প্রথম আলো পত্রিকাটি সংবিধান ও স্পিকারের রুলিং উপেক্ষা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বহুদিন যাবত সংবিধান লঙ্ঘন করে আসছে, যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক (১) (খ) অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার সর্বোচ্চ দণ্ডনীয় অপরাধ। পত্রিকাটি অব্যাহতভাবে অসাংবিধানিক ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার করে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে।
সংবিধান মান্যকরা প্রথম আলোর সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। ইতোপূর্বে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে এসব বিষয় উল্লেখ করে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘সংসদ সদস্য’ শব্দ ব্যবহারের জন্য প্রথম আলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সাথে প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশককে অসাংবিধানিক শব্দের ব্যবহারের জন্য জাতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ করা হয়েছিল। এছাড়াও পাঠকদের উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছিল। এছাড়া প্রথম আলো যাতে অসাংবিধানিক শব্দ ‘সাংসদ’ ব্যবহার না করে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অপর বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছিল।
রিটে আরও বলা হয়, এই পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে অপর বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছিল। নোটিশ প্রাপ্তির পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় রিট ফাইল করা হয়েছে।