September 27, 2023, 7:30 am

কাজিপুরে ১৫০ মিটার বাঁধ যমুনায় বিলীন

কাজিপুর প্রতিনিধিঃ যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহতের কারণে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ অবৈধভাবে যমুনা নদীর তীরে স্তুপ করে রেখে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় এ ধস দেখা দিয়েছে।

বুধরবার (১২ জুলাই) ভোর রাতে কাজিপুর উপজেলার মেঘাই ১ নম্বর স্পারের উজানে এ ধস দেখা দেয়। খবর পেয়ে ধস ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোর থেকেই জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে। এর আগেও গত ৭ জুলাই কাজিপুর মেঘাই স্পার বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, রাতে হঠাৎ করেই ধসে যেতে থাকে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ। এ সময় বাঁধের পাশে নোঙর করে রাখা জেলেদের ৩০টি নৌকা মাটিচাপা পড়ে। অপরদিকে বালু ব্যবসায়ীদের স্তুপ করে রাখা বালুর একটি বড় অংশও নদীগর্ভে চলে যায়। এতে হুমকির মুখে পড়েছে কাজিপুর থানা, খাদ্য গুদাম, মডেল মসজিদ, স্কুল-কলেজ, মাদ্রারাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, কয়েকজন ব্যবসায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম না মেনে নদী তীরের ১০ ফুটের মধ্যে বালু স্তুপ করে রেখে ব্যবসা করার কারণেই এ ধস দেখা দিয়েছে। গত ২০ জুন ওই বালুর পয়েন্ট অপসারণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও বালুর স্তুপ সরানো হয়নি।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মো. অনিক ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বাঁধ ধসের বিষয়টি অবগত হয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। পরে পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। সকাল ৬টা থেকে পাউবো জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে। রাতে ভাঙনটা বেশি ছিল। এখন একটু কম।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও প্রশিক্ষণে রয়েছেন। বালুর স্তুপ রাখার অভিযোগ ইউএনও পেয়েছেন কি না জানা নেই। তবে আমরা নদী তীর থেকে বালু সরানোর জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছিলাম। এরপর সেখান থেকে তারা বালু অপসারণও শুরু করে, কিন্তু পুরোপুরি সরানোর আগেই ভাঙন দেখা দিল। ভাঙনে তাদের বালুরও একটি বড় অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।

কাজিপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব জানান, যমুনা নদীতে গত কয়েকদিন ধরে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার ফলে আজ ভোর রাতে স্পার এলাকায় ধস শুরু হয়েছে। রাতেই ওই স্পারের প্রায় ১৫০ মিটার নদীগর্ভে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, এ স্পারটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হলে কাজিপুর থানা, খাদ্য গুদাম, রেজিস্ট্রি অফিস, কাজিপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়বে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, ওখানে আমাদের প্রটেকটিভ বাঁধ ছিল। ভোরে সেখানে ধস শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমরা ভোর থেকেই সেখানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছি। এখন ভাঙন নিয়ন্ত্রণে।

তিনি বলেন, বালু ব্যবসায়ীদের ড্রেজারের ভাইব্রেশনের কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপকভাবে বাড়ছে নদীর পানি। রয়েছে তীব্র স্রোত। এসব কারণেই ভাঙন দেখা দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD