April 19, 2024, 3:52 am

কেরানীগঞ্জে ৯৮ ভরি স্বর্ণ লুট:পুলিশসহ গ্রেপ্তার ৮

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ঢাকার আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা মহানগর এবং খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৯৮ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মো. জাকির হোসেন (৩৮), শফিকুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৮), শরীফ (৩৬), উত্তম মজুমদার (৩৬), মো. রায়হান (৩২), আনন্দ পাল (২৭), নাহিদা নাহার মেমী (৩২) এবং রাজধানীর লালবাগ থানার পুলিশ কনস্টেবল মো. কামরুজ্জামান লিখন (৪২)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল জামটি বাজারের সোলাইমান জুয়েলার্সের মালিক মো. হাবু মিয়া তার দোকানের কর্মচারী বরুন ঘোষের মাধ্যমে ৯৮ ভরি ওজনের ৮টি লম্বা (বিস্কুট আকৃতির) তেজাবি স্বর্ণ (গলানো স্বর্ণ) তাঁতীবাজারের স্বর্ণের দোকানে পাঠান গহনা তৈরির জন্য। বরুন ওই স্বর্ণ কোমরে গুঁজে বিকাল ৩টার দিকে মোটরসাইকেলে করে সিংগাইর থেকে রওনা হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জনি টাওয়ার সংলগ্ন সাজেদা হাসপাতালের গলির রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে অটোরিকশা ও পরবর্তীতে নৌকায় করে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে তাঁতিবাজার স্বর্ণের দোকানে যান।

তাঁতিবাজারের স্বর্ণের দোকান বন্ধ থাকায় বরুন ঘোষ ওই স্বর্ণ নিয়ে পুনরায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জনি টাওয়ার সংলগ্ন সাজেদা হাসপাতালের গলির রাস্তায় মোটরসাইকেলের কাছে আসে।

সেখানে আসা মাত্র আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ডাকাতচক্রের সদস্যরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশের পোশাক পরে ও নিজেদেরকে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে বরুনের কাছে অবৈধ মালামাল আছে এই অভিযোগে তাকে জোরপূর্বক ডাকাতদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।” তাকে গাড়িতে তুলেই তার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে মারধর করে। এক পর্যায়ে বরুনের কাছে থাকা উল্লেখিত ৮টি স্বর্ণের বার, স্বর্ণ চালানের কাগজপত্র ও নগদ তিন হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঝিলমিল এলাকার ফাঁকা স্থানে গিয়ে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

বরুন বিষয়টি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে দোকান মালিক হাবু মিয়াকে জানান এবং এরপর হাবু মিয়া বাদী হয়ে ৩ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এসপি বলেন, তদন্তের শুরুতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ভিডিও সংগ্রহ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটিকে শনাক্ত করে। পরে ঢাকার আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা মহানগর এবং খুলনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আটজনকে গ্রেপ্তার করে।

কেরানীগঞ্জে ৯৮ ভরি স্বর্ণ লুটের ঘটনায় পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে পুলিশকে জানান, তারা পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ডাকাতি করে থাকে।”

পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে লুণ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৫১ ভরি ৬ রতি স্বর্ণ ও স্বর্ণ বিক্রয়ের নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয় বলে এসপি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মামুন অর রশিদসহ এসআই অলোক অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর অলোক কুমার দে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় যোগদান করে প্রায় ১০০ টির মতো মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছেন, যা মাননীয় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহোদয়দের উপস্থিতিতে প্রকৃত মালিকদেরকে প্রদান করা হয়েছে, এর আগেও তিনি তার চাকরি জীবনে অনেক clueless মামলার তদন্তে সফলতা অর্জন করেছেন। তাছাড়া মোবাইল উদ্ধারের ব্যাপারে তিনি ম্যাজিক ম্যান হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ কনস্টেবল কামরুজ্জামান লিংকন ও তার স্ত্রী ১৬৪ ধারার জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে। আসামি সুমনের চার দিনের রিমান্ড ও বাকি পাঁচ জনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। গ্রেফতারকৃত পুলিশ কনস্টেবল কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ও তার স্ত্রী কাশিমপুর কারাগারে আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD