April 18, 2024, 8:45 pm

আজ আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস

আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস আজ (১০ সেপ্টেম্বর)। ২০০৩ সাল থেকে প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালন করা শুরু হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি এক গবেষণার দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৩ হাজার থেকে ৬৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম।

এদিকে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে আঁচল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৯৪ শতাংশ স্কুলগামী শিক্ষার্থী।

২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক নির্যাতন, কলহ, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, পরীক্ষা-প্রেমে ব্যর্থতা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, প্রাত্যহিক জীবনের অস্থিরতা, নৈতিক অবক্ষয় ও মাদক ইত্যাদি কারণে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক আরটিভি নিউজকে বলেন, আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য মানুষকে হতাশায় ফেলে দিচ্ছে। আর কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এটা শুধু বাংলাদেশে নয় সারাবিশ্বেও এমন দেখা যাচ্ছে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ আরটিভি নিউজকে বলেন, মানসিক রোগীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। বিষণ্ণতার রোগীদের মধ্যে এক ধরনের তীব্র আশাহীনতা তৈরি হয়। তারা মনে করে মুক্তির একমাত্র উপায় নিজেকে মেরে ফেলা। এ চিন্তায় তাড়িত হয়ে তারা আত্মহত্যা করে।

আত্মহত্যা প্রতিরোধ

আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শিশুদের বিকাশের সময় তাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা সফলতার মতো ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারে। যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যা বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। বিষণ্ণতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ সব মানসিক রোগের দ্রুত শনাক্ত করা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পারিবারিক বন্ধনগুলো দৃঢ় করতে হবে পাশাপাশি পরিবারে প্রত্যেকের সঙ্গে ভাল সময় কাটাতে হবে। আত্মহত্যার সংবাদ পরিবেশনের সময় গণমাধ্যমগুলোকে সবসময় অনুমোদিত নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর ব্যবহারকারীদেরও সতর্কতার সঙ্গে আত্মহত্যার বিষয় নিয়ে মন্তব্য ও ছবি পোস্ট করতে হবে। এখানেও কোনও আত্মহত্যার ঘটনাকে খুব মহৎ করে দেখানোর চেষ্টা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর কর্তৃপক্ষেরও নিজস্ব নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।

আত্মহত্যা প্রতিরোধে একটি সার্বক্ষণিক হটলাইন এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন ঢাবি শিক্ষক তৌহিদুল হক। তিনি বলেন, সরকারি একটি হটলাইন চালু করা জরুরি। যেটাতে রোগী বা তার পরিবার যোগাযোগ করে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শসহ কাউন্সেলিংয়ের মধ্যে থাকতে পারে। যাতে সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারে। এ জন্য সবাইকে যার যার ক্ষেত্র থেকে একযোগে কাজ করারও পরামর্শ দেন এই সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD