October 13, 2024, 12:21 am
যমুনা নিউজ বিডিঃ যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সহায়তার জন্য আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেন থেকে প্রায় দেড় লাখ টন শস্য কেনার পদক্ষেপ নিচ্ছে। খাদ্যগুলো যেসব বন্দর যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়নি সেসব বন্দর থেকে সংগ্রহ করা হবে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এ তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান ডেভিড বিসলি। তিনি জানান, এসব শস্যের চূড়ান্ত গন্তব্য নিশ্চিত করা হয়নি। এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
বিসলি বলেন, জাতিসঙ্ঘ সংস্থাগুলোর মধ্যে ডব্লিওএফপি ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করে। তারা দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে লড়তে আগের তুলনায় ছয়গুণ বেশি খাদ্য সরবরাহ পেতে চাচ্ছে। সংস্থাটির খাদ্যশস্য ভর্তি একটি জাহাজ এখন ইউক্রেন থেকে আফ্রিকার শৃঙ্গ-এর (হর্ন অফ আফ্রিকা) দিকে যাচ্ছে, যেখানে মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
উত্তর কেনিয়া থেকে শুক্রবার বিসলি জানান, খরা আফ্রিকার শৃঙ্গকে নির্জীব করে ফেলেছে। তিনি স্থানীয় নারীদের সাথে করে একটি কাঁটা গাছে নিচে বসে ছিলেন। ওই নারীরা তখন এপিকে বলেন, ২০১৯ সালে সেখানে শেষবার বৃষ্টি হয়েছিল।
এই হাড়-সর্বস্ব মানুষগুলো কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আরো একটি বৃষ্টিহীন বর্ষাকালের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি এই অঞ্চলের কিছু অংশ, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ সোমালিয়াকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে, এখানে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দু’কোটি ২০ লাখের মতো।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান বলেন,কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দেয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এই পরিস্থিতিকে ঝড়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রবল ঝড়, সুনামির মধ্যে সবচেয়ে প্রবল সুনামি হিসেবে উল্লেখ করেন। এ অঞ্চল ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবে খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্য মোকাবেলা করছে।
ইউক্রেন থেকে ২৩ হাজার টন শস্য নিয়ে আসছে বহুল প্রতীক্ষিত প্রথম জাহাজ। এই চালান ১৫ লাখ মানুষের জন্য এক মাসের সমপরিমাণ খাদ্য। বিসলি বলেন, ওই জাহাজ ২৬ বা ২৭ আগস্ট জিবুতিতে নোঙর করবে। এসব গম পাঠানো হবে টিগ্রা, আফার এবং আমহারা অঞ্চলে। যেখানে মানুষ কেবল খরার সাথেই লড়ছে না, সেখানে চলছে সঙ্ঘাত।
গত বছর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এক কোটি ৩০ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য যে পরিমাণ শস্য কিনেছিল, ইউক্রেন ছিল তার অর্ধেকের উৎস। গত মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেন জাতিসংঙ্ঘ ও তুরস্ক সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যার ফলে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনীয় শস্য রফতানি শুরু হয়।
বিসলি বলেন, ইউক্রেনের বন্দরগুলো ধীর গতিতে খোলার কারণে এবং কৃষ্ণ সাগরে জাহাজগুলো সবধানে চলাচল করায় বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কোনো সম্ভাব্য সমাধান দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, বিশ্বের ক্ষুধার্ততম অঞ্চলে খাদ্য ও অন্য সহায়তা সরবরাহে ধনী দেশগুলোর আরো অনেক কিছু করার আছে।
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত অঞ্চলে শস্য ও অন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার ধনী দেশগুলোর আরো অনেক কিছু করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা