March 28, 2024, 11:55 pm
যমুনা নিউজ বিডিঃ রাজধানীর মিরপুরস্থ স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখায় লুঙ্গি পরে ‘পরাণ’ দেখতে গিয়েছিলেন এক প্রবীণ। কিন্তু টিকিট বিক্রি করা হয়নি তার কাছে। লুঙ্গি পরে যাওয়াই ছিল তার অপরাধ। দৃশ্যটি কেউ একজন ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেই ছড়ে পড়ে তা। নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রতিবাদস্বরূপ আজ বৃহস্পতিবার লুঙ্গি পরে ‘পরাণ’ দেখতে এসেছেন দুই যুবক।
ঠিক কী কারণে লুঙ্গি পরে সিনেমা হলে এসেছেন—জানতে চাইলে তারা বলেন, “অনেক আগে থেকেই ‘পরাণ’ দেখব ভাবছিলেম। গতকাল বুধবার আসার কথা থাকলেও আসা হয়নি। এরমধ্যে দেখতে পেলাম এক বয়স্ক ব্যক্তি লুঙ্গি পরে আসায় তাকে সিনেমাটি দেখতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টা খারাপ লেগেছে। সেকারণেই আমরা আজ লুঙ্গি পরে এসেছি।”
এমন বৈষম্যমূলক আচরণ বাংলা সিনেমার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে উল্লেখ করে তারা বলেন, “দেখুন ‘পরাণ’ যে সবশ্রেণির দর্শক টানছে তার প্রমাণ এই লুঙ্গি পরিহিত ব্যক্তি। তাকে দেখেই মনে হচ্ছিল টিকিটের টাকাটা জোগাড় করতে কষ্ট হয়েছে। তিনি কিন্তু চাইলে অন্য হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখতে পারতেন। একটু স্বস্তির সঙ্গে দেখতে চান বলেই এখানে এসেছিলেন। তিনি সহযোগিতা পাওয়ার কথা থাকলেও হয়েছেন অপমান। এটা অবশ্যই আমাদের সিনেমার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।”
সবশ্রেণীর দর্শককে সমান চোখে দেখা উচিত বলে মনে করেন তারা। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটি সিনেমা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগায়। অতএব একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পরিবর্তে সকল দর্শককে সম্মানের চোখে দেখা উচিত। কে লুঙ্গি পরে এলো আর কে প্যান্ট পরে এলো—সেটা বড় কথা না। তারা সবাই দর্শক—এটাই বড় কথা।’
এসময় লুঙ্গিকে দেশের ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে দর্শক দুজন আরও বলেন, ‘লুঙ্গি আমাদের ঐতিহ্য। আমাদের শিকড়ের পরিচয় বহন করে। পোশাকটির প্রতি সবার সম্মান রাখা উচিত। আমরা বিদেশে গিয়ে লুঙ্গিকে আমাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে তুলে ধরি। অথচ কাজের বেলায় ঠিক উল্টো দেখলাম আমরা। এখানে লুঙ্গি পরে এসে অপমানিত হতে হয়। এ ধরণের আচরণ ত্যাগ করতে হবে।’ তরুণ দজন মনে করেন এই বৈষম্য শুধু এই সিনেপ্লেক্সে নয় রেস্তোরাঁসহ শহরের বেশকিছু স্থানে লুঙ্গি পরিহিতদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। লুঙ্গির প্রতি এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দ্রুত অবসান চান তারা।