April 20, 2024, 1:24 pm
যমুনা নিউজ বিডিঃ সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ উন্নতিতে সন্তুষ্ট না হয়ে নতুন করে সম্ভাব্য আরও বন্যা হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে তা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্র্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আমরা কেউ যেন সন্তুষ্ট না থাকি। পানি এসে দ্রুত চলে গেছে বলে এটা মনে করার কারণ নেই যে পানি আর আসবে না।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস যেমন দেখছি, তাতে একেবারে অসম্ভব কিছু না যে, পরে আবার এ রকম বন্যা হতে পারে। আসামে ম্যাসিভ বন্যা হয়েছে, কিন্তু আসামের পানি সেভাবে আসেনি, যেভাবে মেঘালয়ের পানি আসছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকদের বলে দেওয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকদেরও বলা হয়েছে, আসামের পানি এলে তারা যেন রেডি থাকেন।
বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে ও তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফরে যাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বন্যার মতো এ ভয়াবহ দুর্যোগকালীন নির্দেশনা মোতাবেক সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে সবাইকে একসঙ্গে বসে বন্যা মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছে। বিশেষ করে কৃষিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর পর বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে যেন ভাসমান বীজতলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে যে পানি এসেছে সেটা মেঘালয় দিয়ে এসেছে। মেঘালয় দিয়ে আসার কারণে একটা স্পেসিফিক জোনে পানি বেশি ছিল। আসাম ও ত্রিপুরায়ও কিছু বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু সেটার ইম্প্যাক্ট ঠিক আমাদের এখানে সেভাবে পড়েনি।
আনোয়ারুল বলেন, চারপাশে দেয়াল তৈরি করে সুনামগঞ্জ সদরের খাদ্যগুদাম রক্ষা করা হয়েছে। আর একটা গুদামে সার ছিল, সেটাও আমরা রক্ষা করতে পেরেছি। সিলেটের বন্যায় সবচেয়ে প্রশংসিত বিষয়, সেখানকার মানুষের ধৈযশীল। আমি বহু বন্যা হ্যান্ডেল করেছি। সিলেটে মানুষ ধৈর্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিচ্ছে, মানুষ কোথাও ক্ষুব্ধ হয়নি। তিনি জানান, বন্যার পানি সরাতে প্রয়োজনে রাস্তা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে রাস্তার ৫-৬ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রাস্তা কাটার দরকার হয়নি।
এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দপ্তর থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হবে। বরাবরের মতোই রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার এ সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করবে।
আগামী শনিবার সকালে পদ্মা নদীর ওপর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দেশের অন্যতম বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা। সেদিন উৎসব হবে সারাদেশে।
এদিকে টানা বৃষ্টি আর প্রবল বর্ষণে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বেশ কিছু এলাকায় চলছে বন্যা। বন্যা পরিস্থিতি এবং বন্যার্ত মানুষের দুর্দশা সরেজমিন দেখতে আজ মঙ্গলবার সিলেটে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার খবর নিয়মিত রাখছেন তিনি এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি তার সরকারের রয়েছে।