April 19, 2024, 10:48 pm

মোবাইল কোর্টে জরিমানা অর্থ কোষাগারে জমা হচ্ছে কিনা তদারকির নির্দেশ

যমুনা নিউজ বিডিঃ ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদায় করা জরিমানার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না করে আত্মসাতের মামলায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের বরখাস্ত অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ইমাম উদ্দিনের ২৮ বছরের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তবে ইমাম উদ্দিনের স্ত্রী একই কার্যালয়ের অফিস সহকারী কমলা আক্তারকে ৮ বছরের কারাদ- থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আপিলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুন নেসা রতœা। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মানিক সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, জেলা প্রশাসন থেকে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যে জরিমানার অর্থ আদায় করা হয়, সেই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে সঠিকভাবে জমা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। জেলা প্রশাসক ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে এ বিষয়ে নজর রাখতে বলেছেন আদালত। এই পর্যবেক্ষণ সব মোবাইল কোর্টের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলেও জানান তিনি।
আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, বিচারিক আদালত ইমাম উদ্দিনকে পাঁচটি ধারায় মোট ২৮ বছরের কারাদ- দিলেও সব ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল রায়ে। পাঁচটি ধারার মধ্যে একটি ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ছিল ১০ বছরের কারাদ-। আপিল খারিজ হওয়ায় ইমাম উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদ- ভোগ করতে হবে।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ইমাম উদ্দিন ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ২৬ মে পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় জেলা প্রশাসন থেকে ৭৫৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসব মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মোট ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল। কিন্তু এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে ৫৪টি জাল চালান তৈরি করে তা আত্মসাৎ করেন ইমাম উদ্দিন। তদন্তে বিষয়টা ধরা পড়ার পর কিছু টাকা পরবর্তীতে তিনি জমা দেন এবং জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন। এতে সহযোগী ছিল তার স্ত্রী বেঞ্চ সহকারী কমলা আক্তার। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদায় করা মোট ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ২৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৮ জুন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম জিনিয়া জিন্নাত পালং থানায় মামলা করেন। এই বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বিশেষ জজ মতিয়ার রহমান পাঁচটি ধারায় ইমাম উদ্দিনকে মোট ২৮ বছর কারাদ- এবং ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ২৪ টাকা অর্থদ- দেন। অনাদায়ে তাকে আরও ৭ মাস ১৫ দিনের কারাদ- দেওয়া হয়। এ ছাড়া কমলা আক্তারকে দেওয়া হয় ৮ বছর কারাদ- ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদ-। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দ-প্রাপ্ত দুই আসামি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD