March 29, 2024, 12:02 am

করোনার তৃতীয় ডোজ: সাড়া মেলেনি জনসাধারনের

যমুনা নিউজ বিডিঃ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরাধে ‘বুস্টার ডোজ সপ্তাহ’ শুক্রবার শেষ হয়েছে। তৃতীয় ডোজের এই গণটিকা কর্মসূচিতে মানুষের আগ্রহ ছিল কম। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে দেশব্যাপী প্রায় দেড় কোটি ডোজ দেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও ৩৬ লাখের মতো মানুষ টিকা নেননি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি টার্গেট পূরণ হয়েছে।

জানা গেছে, ৩১ মে বুস্টার সপ্তাহের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়। সেখানে ৪ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত দিনে অন্তত ২০ লাখ ডোজ প্রয়োগ লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু একদিনও সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। প্রথম দিন শনিবার ১২ লাখ ৯ হাজার ৪৭৭ ডোজ দেওয়া হয়। এভাবে রোববার ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭৯৯, সোমবার ১৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৯৭, মঙ্গলবার ১৯ লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৬, বুধবার ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৩৮, বৃহস্পতিবার ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৫ ও শুক্রবার ৪ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ ডোজ দেওয়া হয়। সবমিলে কর্মসূচিতে এক কোটি ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৯ জন তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৮১ ডোজ ঘাটতি আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনা সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণে। সংক্রমণের গতিকে থামাতে বড় ভূমিকা রেখেছে এই টিকা। এখনো বুস্টার ডোজ নেওয়ার উপযুক্ত প্রায় ৩ কোটি মানুষ অপেক্ষমাণ। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য বিভাগের লক্ষ্য ছিল এক কোটি ৪৪ লাখ ডোজ প্রদান। সেখানে এক কোটি ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৯ জনকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অথচ আগের বিশেষ ক্যাম্পেইনে এক দিনে এক কোটি ডোজ দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। মূলত টিকা সম্পর্কে জনসাধরণের মধ্যে উৎসাহ তৈরি করতে না পারা, গুরুত্ব বোঝাতে ব্যর্থ হওয়া ও প্রচার-প্রচারণায় ব্যাপক ঘাটতি ছিল। ফলে লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘করোনা টিকা বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক দাবি করেন, এক কোটি ৪৪ লাখ ডোজ প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অন্যভাবে হিসাব করা। বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা স্বাস্থ্য বিভাগের সব সময়ের টার্গেট। সে অনুযায়ী প্রয়োগ সম্ভব হয়েছে বলে মনে করি। এক সপ্তাহে এক কোটি ৭ লাখ দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সংক্রমণ কমে যাওয়ায় টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ কম থাকবে কর্মসূচির পূর্বে সেটা বিবেচনায় নিয়ে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো দরকার ছিল। ফের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করছে। এপ্রিল, মেতে দৈনিক শনাক্ত এক শতাংশের নিচে থাকলেও জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এক শতাংশের উপরে উঠেছে। যা আরেকটি ওয়েভ বা ঢেউয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মানুষকে টিকায় আগ্রহী করতে সরকারকেই বেশি কাজ করতে হবে। কিভাবে সবাইকে দ্রুত টিকার আওতায় আনা যায় সে ব্যাপারে কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবে।

উল্লেখ্য, দেশে গত বছর ২৭ জানুয়ারি থেকে করোনা টিকার নিবন্ধন শুরু হয়। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু হয়। শুক্রবার পর্যন্ত প্রথম ডোজ পেয়েছে ১২ কোটি ৮৮ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫০ জন। এছাড়া দুই ডোজের টিকা পেয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪ জন। তারমধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার ৯১৩ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD