October 16, 2024, 7:06 am
যমুনা নিউজ বিডি: অবশেষে তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আর নতুন প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে সাকিব আল হাসানকে টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব দিয়ে তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের যুগে প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশ। এর প্রায় ৬ বছর পর গত আগস্টে সেই সাকিবের হাত ধরেই তিন ফরম্যাটে এক অধিনায়ক তত্ত্বে ফিরে যায় বাংলাদেশ। শান্তকে দায়িত্ব দেয়ার পর এবার একসাথেই তিন ফরম্যাট থেকে দায়িত্ব ছাড়ায় সাকিবের নেতৃত্ব অধ্যায়ের ইতি ঘটলো।
সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে এ কথা জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। তিনি জানান, অন্তত আগামী এক বছরের জন্য তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন শান্ত।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফি বিন মর্তুজার সহ-অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। প্রথম টেস্টে মাশরাফি ইনজুরিতে পড়ায় সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়। সেটাই ছিল নেতা সাকিবের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। সেখানে নিজেকে প্রমাণ করায় পরের সিরিজেই তাকে ভারমুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে নেতৃত্ব দেয় বিসিবি।
প্রথম দফায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রায় দুই বছর। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এই অলরাউন্ডারকে। এর ৬ বছর পর ২০১৭ সালে মাশরাফি বিন মর্তুজা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে গেলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে আবারো নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। একই বছরে মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সাদা পোশাকের অধিনায়কের দায়িত্বও পান তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়ে দ্বিতীয় দফায় নেতৃত্ব হারান।
এরপর ২০২২ সালের জুনে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে আবারো দলের নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। মাস কয়কে পরেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বও পান তিনি। আর গত বছরের ১১ আগস্ট তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক করা হয় সাকিবকে। ৭ মাস পর এবার অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের ইতি টানলেন সাকিব।
সাকিবের রেখে যাওয়া চেয়ারটা এখন শান্তর জন্য বরাদ্দ। এবারই প্রথমবারের মতো স্থায়ীভাবে অধিনায়কত্ব পেলেন শান্ত। তবে এর আগেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে এই টপ অর্ডার ব্যাটারের। নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে একাধিক সময়ে লাল-সবুজের হয়ে টস করেছেন শান্ত। সেই সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়! এখন পর্যন্ত সব সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশকে ১১ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত।
সাদা পোশাকে তার অধিনায়কত্বে মোট ২টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে এক টেস্টে হারের বিপরীতে একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে শান্তর নেতৃত্বে ৬ ম্যাচ খেলে ৫ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে টাইগাররা। আর টি-টোয়েন্টিতে ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ১ হার অধিনায়ক শান্তর। অপর একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
অপরদিকে, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক হিসেবে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সাথে নতুন করে চুক্তি নবায়ন করেনি বিসিবি। তার জায়গায়-ই চুক্তিবদ্ধ হলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
এতদিন ধরে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলে কাজ করে আসছিলেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক। যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন নান্নু। গত বছরের ডিসেম্বরে বিসিবির নির্বাচক প্যানেলের চুক্তি শেষ হয়। দলের ভরাডুবি ও খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে নানা সময়ে সমালোচনা হয়েছে সদ্য বিদায়ী নির্বাচক প্যানেল নিয়ে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর নির্বাচক প্যানেল থাকবে কি থাকবে না এমন জল্পনা থামল আজ সোমবার বিসিবির বহুল আকাঙ্ক্ষিত বোর্ড মিটিং শেষে। বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন জানালেন, চুক্তি শেষ হওয়ার পর নতুন করে আর নবায়ন করা হয়নি নান্নুর।
এছাড়া বাদ পড়েছেন আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনও। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন বয়সভিত্তিক দলের নির্বাচক হান্নান সরকার। আর নতুন প্যানেলেও ঠাঁই হয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের।
এর আগে বিসিবির সাবেক পরিচালক, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিপিএল গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।