July 27, 2024, 2:07 am

হাওরে চলবে নিয়মিত ফেরি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের তিনটি হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন আর অষ্টগ্রাম যুগের পর যুগ ছিল যোগাযোগ অবাকাঠামোর দিক থেকে আদিম যুগে। কোন সড়ক অবকাঠামো ছিল না। ছিল না কোন ইঞ্জিনচালিত যানবাহনও। ফলে যাতায়াত ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ‘বর্ষায় নাও, শুকনোয় পাও’ দর্শন ছিল হাওরাঞ্চলের যোগাযোগ চিত্র। অপর হাওর উপজেলা নিকলীর সঙ্গে অনেক বছর আগেই জেলা সদরের সড়ক যোগযোগ গড়ে উঠলেও অন্য তিন উপজেলা ছিল আদিম যুগের পর্যায়েই। এই তিন উপজেলা থেকে কোন মানুষ জেলা সদরে অফিস আদালতের কাজে গেলে আগের দিন যেতে হতো। আবার কাজ সেরে হাওরে ফিরতে হতো আরো একদিন পর। এমনই ভোগান্তির জীবন ছিল হাওরবাসীর।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারো কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ঘোড়াউত্রা নদীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরি সার্ভিস আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়েছে। গতকাল ৫ ডিসেম্বর পাটুলী নৌ ঘাট থেকে হুমাইপুর ঘাট দুই কিলোমিটার নদী পথে ফেরি চলাচল চালু করা হয়।

২০২০ সালের কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সঙ্গে শুকনো মৌসুমে সড়কপথে গাড়ি দিয়ে চলাচলের জন্য ঘোড়াউত্রা নদীতে ফেরি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী কাজ করা হলেও ফেরি চলাচল করেনি। এই বছরের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে দুই দিনের জন্য ফেরি সার্ভিস চালো হলেও অজানা কারনে বন্ধ হয়ে যায়। হাওরের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত বাজিতপুর পাটুলীঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ পথ দিয়ে চলাচল করে। হাওর অঞ্চলের মানুষকে সময় ও অর্থ বাঁচাতে ফেরি চলাচল ছিল সময়ের দাবি। বহুল প্রত্যাশিত দাবি বাস্তবায়ন হওয়া হাওরবাসীর উল্লসিত।

বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম। এই সময় উপস্থিত ছিলেন অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. দিলশাদ জাহান, বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ জামান, কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির হোসেন, কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ওসমান মিয়া। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার গণ্যমান্য লোকজনসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন অংশ নেয়।

হুমাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘোড়াউত্রা নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু হবার কারণে হাওরবাসীর অনেক উপকার হয়েছে। বিশেষ করে বাজিতপুরে হুমাইপুর-মাইজচর ইউনিয়ন, অষ্টগ্রাম ও হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মানুষের। তারা এই ফেরি ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে জেলা শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে পারবেন।

অষ্টগ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ জাকির হোসেন জানিয়েছেন, বাজিতপুরের পাটুলী এলাকায় ফেরি সার্ভিস চালু হবার কারণে অষ্টগ্রামবাসীর যাতায়াত সুবিধা এখন কল্পনাতীত। এখন জেলা শহর বা রাজধানী থেকে ফিরে কেউ পাটুলী ঘাটের ফেরি থেকে নেমে ইঞ্জিনচালিত যানবাহনে ৪০ মিনিটে অষ্টগ্রাম সদরে চলে যেতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD