April 24, 2024, 11:08 am

বগুড়ার শাজাহানপুরের মাদ্রাসা ছাত্র সামিউল হত্যাকান্ডে বাবাসহ গ্রেফতার ২

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ তালাক দেওয়ার প্রতিশোধ নিতেই সামিউল ইসলাম কে (১০) হত্যা করে তারই সৎ বাবা ফজলুল হক (৩৫)। হত্যাকান্ডের পর পুলিশ ফজলুল হক ও তার সহযোগী অনিতা রানীকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বেলা ১২টায় বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সংবাদ সম্মলনে এতথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার (১৭ মে) শাজাহানপুর থানার মানিকদীপা কমলাচাপড় গ্রামের একটি লাউ ক্ষেত থেকে অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে উদ্ধারকৃত মরদেহটি একই উপজেলার সাজাপুর পূর্ব দক্ষিণপাড়া তালিমুল কোরআন হাফেজিয়া মাদরাসার আবাসিক ছাত্র সামিউল ইসলাম সাব্বিরের।
শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর গ্রামের মৃত তালেব আলীর মেয়ে সালেহা বেগম তার সন্তান হিসেবে মরদেহ শনাক্তের পর পুলিশকে জানায়, ১২ বছর আগে মাঝিড়া কাগজিপাড়া গ্রামের মৃত মনছুর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে সাব্বির জন্মগ্রহণ করে। মাদক সেবনের কারণে সালেহা বেশ কিছুদিন আগে স্বামী জাহাঙ্গীরকে তালাক দেন। এরপর সন্তানকে সাথে রেখে ফজলুল হককে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ফজলুল হক সন্তানকে মেনে নেয় না। সালেহার সন্তানকে সরানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে এবং সন্তানকে মারধর করে। বাধ্য হয়ে সালেহা গত ১১ মে ফজলুল হককে তালাক দেন এবং তার সন্তানকে ওই মাদরাসার আবাসিকে রেখে আসেন।


ফজলুল হক গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশকে জানায়, তালাক দেওয়ার কারণে সাহেলার ওপর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সালেহার সন্তানের কারণেই তাকে তালাক দেয়। ফজলুল হক একারণে সাব্বিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুয়ায়ী সোমবার (১৬ মে) বিকেলে ফজলুল হক মাদরাসায় গিয়ে সাব্বিরকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এসময় মাদরাসার আবাসিক শিক্ষক আবু মুছা জানিয়ে দেন মায়ের অনুমতি ছাড়া সাব্বিরকে তার কাছে দেওয়া যাবে না।
এসময় ফজলুল হক গ্রেফতারকৃত অনিতা রানীকে সাব্বিরের মা সাজিয়ে ফোন করেন। অনিতা রানী ফোনে সালেহা সেজে তার ছেলে সাব্বিরকে ফজলুল হকের কাছে দেওয়ার জন্য মাদরাসা শিক্ষককে অনুরোধ করেন। পরে সাব্বিরকে ফজলুল হকের সঙ্গে ছেড়ে দেয় মাদরাসা শিক্ষক। ফজলুল হক সাব্বিরকে সাথে নিয়ে খরনা ইউনিয়নের মানিকদীপা কলমা চাপড় গ্রামের মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে একটি লাউ ক্ষেতে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে চলে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, মঙ্গলবার সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর ডিবি ও থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামেন। পুলিশ পরিচয় মরদেহ শনাক্তের পর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিকেলের মধ্যেই ফজলুল হক ও তার সহযোগী অনিতা রানীকে গ্রেফতার করে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD