September 23, 2023, 6:44 pm
ষ্টাফ রিপোর্টার,গাজীপুরঃ লেখাপড়ার বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সে পেটের দায়ে পরিবারের জন্য উপার্জনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতে হয়েছে। দু’বেলার খাবার জোগান দেওয়ার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোধ বৃষ্টি ঝড়ে মেহনত করতে হচ্ছে। সমাজের আর আট-দশটা শিশুর জীবনের মত নয় তার জীবন। যখন অন্য শিশুরা পরিবারের কাছে বায়না করায় ব্যস্ত, তখন সে ব্যস্ত থাকে জীবন যুদ্ধে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আনারুলের সঙ্গে দেখা হয় কালীগঞ্জ বাজার বাসষ্টেন্ড এলাকায়। তখন দেখা যায় লাঠির সঙ্গে লাল রংয়ের হাওয়াই মিঠাই লাগিয়ে এদিক ওদিক ঘুরছে সে। লক্ষ্য তার চেয়েও ছোট কিংবা তার মতো শিশুদের কাছে বিক্রি করা। এসময় অনেকে ছোট সোনামনিদের মন যোগাতে কিনে দিচ্ছে হাওয়াই মিঠাই। হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা প্রতিবেদককে জানায়, পেটের দায়ে উপায় না দেখে এ পথ বেছে নিয়েছে সে। তার তিন ভাই কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে থাকে। তার বাবা হাওয়াই মিঠাইর কারিগর। বাবা হাওয়াই মিঠাই তৈরি করেন আর তারা চার ভাই বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে থাকে। আনারুল (১৫) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার আছির উদ্দিনের ছেলে। সে তার পরিবারের সাথে বর্তমানে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জের পৌর এলাকায় ভাড়া বাড়ীতে থেকে হাওয়াই মিঠাই তৈরি ও বিক্রি করে থাকে। তার সংসারে চার ভাই ও বাবা মিলে পাঁচ জনই হাওয়াই মিঠাইয়ের ব্যবসা করে থাকে। আনারুল বলেন, আমি ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি। পিতা মাতার অভাবের সংসারে বাবা-মা কে সংসারের খরচ যোগাতেই একাজ বেছে নিতে হয়েছে তার। আনারুল আরোও জানায়, প্রতিদিন সে গড়ে ১৫০ পিছ হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে থাকি। প্রতি পিছ ১০ টাকা হারে ১৫ শত টাকা বিক্রি করে থাকি। ১৫০ পিছ হাওয়াই মিঠাই তৈরি করতে খরচ হয় ৬শত হতে ৭শত টাকা। পনের বছর বয়সী আনারুল জানে না তার অনাগত ভবিষ্যতের কথা। হাওয়াই মিঠাই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি মিঠাইয়ের নাম। এখনো এটি গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। একসময় ‘হাওয়াই মিঠাই’ গ্রামাঞ্চলে বেশি পাওয়া যেতো। কিন্তু, আধুনিকতার কারণে এটি এখন আর খুব বেশি দেখতে পাওয়া যায় না। তবে তা একেবারে বিলীনও হয়ে যায়নি।