September 27, 2023, 7:31 am
স্টাফ রিপোর্টার: রাতের আঁধারে বেআইনীভাবে বগুড়ার নিশিন্দারা উপ-শহরে স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকায় একটি পুকুর ভরাট করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। জেলা প্রশাসনের অভিযান সত্বেও ওই মহল পুকুর ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষায় সেখানে পুকুরটি যেন ভরাট না করা হয় সে ব্যাপারে আজ সোমবার (৩ জুলাই) স্বাক্ষরিত স্নিগ্ধা আবাসিক কল্যাণ সমিতি’র প্যাডে এলাকার ২শ’ ৬জন বাসিন্দার স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া হয়েছে।
এর আগে পুকুরটি বাঁচাতে এলাকার বাসিন্দা বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে সেখানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকদফা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর আদেশ যে, খেলার মাঠ, পুকুর, জলাধার, খাল, বিল, ভরাট করে উন্নয়নমূলক কোন কাজ করা যাবে না । কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই আদেশ অমান্য করে ওই পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। এ ব্যাপারে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলাম আজ সোমবার (৩ জুলাই) বলেন, পুকুরটি যেন ভরাট না করতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
পুকুরে বালু ভরাট করার খবর পেয়ে পর গত ৩ দিন সেখানে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পাঠিয়ে দিয়ে পুকুর ভরাট কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানের কারনে সেখানে দিনের বেলায় পুকুর ভরাট বন্ধ থাকলেও রাতের আঁধারে ওই মহল ট্রাকে বালু এনে পুকুরটি ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সেখানে পরিবেশ রক্ষায় কোন অবস্থাতেই পুকুরটি ভরাট করতে দেয়া হবে না। যারা পুকুরটি ভরাট করছে প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন,গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উপ-শহর স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকা ও তার আশপাশ এলাকায় অগ্নি দুর্যোগকালীন পানির প্রয়োজন। কিন্তু ওই এলাকায় পর্যাপ্ত পুকুর নেই।
যে একটি পুকুর রয়েছে তা ভরাটের চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই পুকুর ভরাটের চেষ্টা করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি কঠোর হুসিয়ারি দেন। স্নিগ্ধা আবাসিক প্রকল্পের কয়েকজন স্থায়ী বাসিন্দা জানান, প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী ওই আবাসিক এলাকায় ৩টি পুকুর, ১টি কমিউনিটি সেন্টার ও ১টি মসজিদ বগুড়া পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদনকৃত নকশা দেখিয়ে তাদের কাছে প্লট ও ফ্ল্যাট বিক্রি করা হয়েছে।
এ অবস্থায় ৩টি পুকুরের মধ্যে ২টি ভরাট করে প্লট ও ফ্ল্যাট নির্মাণ করে বিক্রি করা হয়েছে যা দৃশ্যমান। সর্বশেষ যে একটি বড় পুকুর রয়েছে সেটিও ভরাট করে বিক্রি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা স্পষ্টতেই অবৈধ্য ও বে-আইনি।
এ ব্যাপারে বগুড়া পৌর মেয়র রেজাউল আলম বাদশা বলেন, পুকুর ভরাট করা বেআইনী কাজ। পরিবেশ রক্ষায় পুকুর প্রয়োজন। কিন্তু বগুড়ায় পুকুরের সংখ্য কমে আসছে। পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উপ-শহরে স্নিগ্ধ আবাসিক এলাকায় যারা পুকুর ভরাট করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বগুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: শাহ মো: মেহেদী হাসান হিমু বলেন, রাতের আঁধারে ট্রাকে ট্রাকে বালু এনে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে, যা বেআইনি। এ নিয়ে এলাকাবাসি ক্ষুব্ধ। এলাকাবাসি চান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুরটি বেঁচে থাক। পুকুরটি রক্ষায় তিনি সব সময় এলাকাবাসীর সাথেই থাকবেন।