April 20, 2024, 8:31 am
লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় বিপুল চন্দ্র রায় (৩০) নামে এক পুলিশ কনস্টবলের বিরুদ্ধে তার শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার এ ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। তবে ঘটনার ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও তা আমলে নেয়নি থানা পুলিশ। ভুক্তভোগী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন বলে জানা গেছে। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে ধর্ষণের লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে নির্যাতিত ওই স্কুলছাত্রী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী জানান, ঘটনার দিন দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বিপুল। বিচার না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া তার কোনো পথ থাকবে না বলে জানান তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের বৈদ্যের বাজার মীরের বাড়ি এলাকার মৃত মনরঞ্জন রায় খোকার ছেলে এবং লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম দৈলজোড় পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত গ্রীন চন্দ্রের জামাতা। তিনি পুলিশ কনস্টবল পদে গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত রয়েছেন। পুলিশ সদস্য বিপুল সদ্য জন্ম নেওয়া দ্বিতীয় সন্তান ও স্ত্রীকে দেখতে ছুটি নিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর শ্বশুর বাড়ি ওই পশ্চিম দৈলজোড় পাঁচপাড়া গ্রামে আসেন। ওইদিন রাতে শ্বশুরবাড়ির পাশে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলায় পাড়ার অনেকেই সেখানে ব্যস্ত ছিলেন। ওই পুলিশ সদস্যের কাকা শ্বশুরের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী (১৬)। তিনি রাতে নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিল। এসময় রাত ১১টার দিকে স্কুলছাত্রীর ঘরের দরজা কৌশলে খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন পুলিশ সদস্য বিপুল। এরপর ওড়না দিয়ে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায়। এক পর্যায়ে পেঁচানো ওড়না মুখ থেকে খুলে গেলে নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর চিৎকারের স্থানীয়রা ছুটে এসে লম্পট দুলাভাই পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্রকে আটক করেন। পরে বিপুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেয়ে রাতেই আটক বিপুল চন্দ্রকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্কুলছাত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্রকে প্রধান আসামি করে তার শ্যালক ও শ্যালকের বউয়ের বিরুদ্ধে পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। অভিযোগের পর থেকে আজ পর্যন্ত থানা পুলিশ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর মা বলেন, বিপুলের শ্বশুররা প্রভাবশালী। বিপুল নিজে পুলিশে চাকুরি করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি তাই থানা পুলিশ বলছে, তদন্ত করতে হবে, সময় লাগবে। কিন্তু থানা পুলিশ ৮ দিনেও তদন্তে আসেনি। আমরা কি বিচার পাবো না বলে আহাজারি করেন ভুক্তভোগীর মা।
আদিতমারী থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযোগ দিলেও পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্তের জন্য অফিসার এখনো পাঠানো হয়নি। তবে তদন্ত চলছে। স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মত একটি ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওসি স্যারকে বলেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন।’