July 27, 2024, 6:17 am

বগুড়ার বাঘোপাড়া হাটের জায়গা নিয়ে দৈনদশা কবে কাটবে

এস আই শফিকঃ বগুড়া সদর উপজেলার ঐতিহাসিক বাঘোপাড়া সরকারি হাটের জায়গা ফোর লেনে বিলিন হয়েছে। দোকান বসানোর জায়গা না পেয়ে বিপাকে পড়েছে শতশত ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। বাজার করতে এসে বিপাকে পরেছেন ক্রেতারা সাধারণ।
কেনাকাটা বা ব্যবসা বানিজ্য বাড়লেও অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন নেই বাঘোপাড়া বন্দরের এ হাটে। জায়গা সংকটে আমদানি করা পণ্য রাখা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বাধ্য হয়েই বাঘোপাড়া মহাসড়কের পূর্বপাশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে কোনমতে দোকানদারী করছেন। এতে যেকোন মুহূর্তে ঘটতে পাশে বড়-ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা। ঘটতে পারে প্রানহানী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে , প্রতি সপ্তাহে রবি- মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ৩দিন হাট বসে বাঘোপাড়া বন্দরে। স্থানীয়রা জানান, আগে সবজি মৌসুমে জমজমাট ভাবে পাইকারি কাঁচামাল ক্রয় বিক্রয় হতো এ হাটে। দূর- দূরান্ত থেকে পাইকাড় ও ক্রেতা- বিক্রেতাদের সমাগম ছিল লক্ষনীয়। হাটবারে বাঘোপাড়া বিশ্ব রোডের পশ্চিম পার্শে, স্কুল মাঠ ও আশেপাশের ফাঁকা জায়গাতেই বসতো দোকানপাট, চলতে বেচা কেনা। কিন্তু কালের বিবর্তনে বাঘোপাড়া বন্দরে গড়ে উঠেছে বিচিত্র দোকানপাট। তারপর সংকীর্ণ হয়ে যায় হাটের জায়গা। এমতাবস্থায় শুধু বাঘোপাড়া বন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদের উত্তর পাশে ফাঁকা জায়গায় বসত নানা রকম দোকানপাট। কিন্তু মহাসড়কের ৪ লেন উন্নতকরণ করতে গিয়ে দোকান গুলোকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। উল্লেখ্য স্থানে চলছে রাস্তা নির্মানের কাজ।
বাঘোপাড়া বন্দরে দীর্ঘদিন যাবত কাঁচা সবজি বিক্রেতা বাদল সরকার জানালেন, গত ১ সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজার থেকে যে পরিমাণ সবজি কিনে বাঘোপাড়া বাজারে এসে বিক্রি করি, এতে লাভ তো দূরের কথা, কেনা দামও উঠছে না। ফলে লোকসানে পড়তে হচ্ছে। এব্যাপারে তিনি হাটের অব্যবস্থাপনাকে দায়ি করছেন। বাঘোপাড়া বন্দরে মনোহারী দোকানদার পান বারি জানান, বহু বছর ধরে বাঘোপাড়া বন্দরে দোকান করি। সাম্প্রতিক জায়গার অভাবে আমদানি করা পণ্য খোলা আকাশের নিচে রেখে বিক্রি করতে হচ্ছে।
একই অভিযোগ করলেন মাংস বিক্রেতা রতন মিয়া। তিনি জায়গা না পেয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। দোকানদার দুলা, আলহাজ্ব পুটু বলেন আমি পুর্বে যে ভাবে বেচা কেনা করেছি তার চার ভাগের এক ভাগও এখন হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। এদের মত অনেক ব্যবসায়ীকেই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বাজার করতে আসা ক্রেতা বাদশা মিয়া বাবু জানান, বাজার করতে এসে দেখি দোকান পাট এলোমেলো, আমার প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস পাচ্ছি না। এখন মনে হয় আমার মহাস্থানে যেতে হবে।
এ বিষয়ে বাঘোপাড়া হাট ইজারাদার বলেন, বাঘোপাড়া সরকারি ডাকের একটি হাট। এই হাট ভেঙে যাওয়ার ফলে অনেকেই রাস্তার দক্ষিণপাশে দোকান দিয়েছে। সেখানে আমার লোকজন হাটের খাজনা নিতে গেলে তাদের সাথে প্রতিদিন কথা কাটাকাটি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাটের জায়গায় নেই খাজনা দিবো কেন? স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাঘোপাড়া হাটের জায়গা নিশ্চিত করে হাট পুনরায় রক্ষা করলে এতে করে যেমন সরকারি রাজস্ব বাড়বে। সেই সাথে এলাকার অনেক ব্যবসায়ীরা কর্মস্থান ফিরে পাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে এ হাটের জায়গা নির্ধারণ করে ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান রক্ষা ও বাঘোপাড়া বন্দরের উন্নয়নকে তরান্বিত করতে আহবান জানান সচেতন মহল।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD