April 25, 2024, 8:01 am

ভারতের ক্ষমতাসীন দলে কোনো মুসলিম এমপি থাকল না

যমুনা নিউজ বিডিঃ ভারতের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন দলের কোনো মুসলিম এমপি নেই। বুধবার (৬ জুলাই) দেশটির কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভী পদত্যাগ করেছেন। এছাড়াও ইস্পাতমন্ত্রী আরপি সিংও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৬৪ বছর বয়সী নকভী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন।

এমন এক সময় এই রাজনীতিবিদ সরে দাঁড়িয়েছেন, যখন দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলমানরা ব্যাপক নিপীড়নের মুখে রয়েছে। ২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে সংখ্যালঘুরা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে।

ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্রায় ২০ কোটি মুসলমানের বসবাস।

৪৬ বছর বয়সী অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসা স্মৃতি ইরানির স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন নকভী। সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, নকভীকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।

মন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আগে তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় প্রেসিডেন্ট জে পি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন। এতে করে ওই গুঞ্জন ঘিরে আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে।

নকভীকে ঘিরে গুঞ্জন যদি সত্যি হয়, তাহলে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিকে বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। সম্প্রতি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে মুখপাত্র নূপুর শর্মার মন্তব্যের জেরে তুমুল চাপের মুখে পড়ে দলটি।

আগামী ৬ আগস্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভেঙ্কাইয়া নাইডুর মেয়াদ শেষ হবে ১০ আগস্ট। গত মাসে দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীতি করেছে বিজেপি। যদি তিনি জয়ী হন, তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভারত প্রথম কোনো উপজাতি রাজনীতিবিদকে পাচ্ছে।

ভারতীয় সংবিধানে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্টের মর্যাদা অনেকটা আনুষ্ঠানিক। তাদের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা নেই বললেই চলে। প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভার হাতেই থাকে সম্পূর্ণ নির্বাহী ক্ষমতা।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের দাবি করছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। লোকসভায় দলটির ৩০১ সদস্য সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত।

নকভীর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে রাজ্যসভায় ক্ষমতাসীন বিজেপির কোনো মুসলিম সদস্য থাকছে না। অর্থাৎ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে বিজেপির ৩৯৫ সদস্যের মধ্যে কোনো মুসলমান নেই। যা বিজেপির স্লোগান ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এ স্লোগানের অর্থ হচ্ছে, সবার জন্য ঐক্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি।

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরতী আর জেরাথ বলেন, ঐতিহাসিকভাবেই বিজেপিতে মুসলমানদের উপস্থিতি নামেমাত্র। কিন্তু বর্তমানে যা ঘটছে, তা একেবারে নতুন ও অস্বাভাবিক। তাদের কাছে নামেমাত্রও কোনো মুসলিম থাকছে না। মোদির অধীন বিজেপি কতটা পরিবর্তিত হয়েছে, এ ঘটনায় তা-ই বলে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এভাবে তারা বলতে চাচ্ছে যে মুসলমানদের সমর্থন ছাড়াও তারা জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হতে পারে।

বিজেপির সংখ্যালঘু শাখার প্রধান জামাল সিদ্দিকী বলেন, প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মকে বিবেচনায় রাখে না তার দল। প্রয়োজন অনুসারে আসন বণ্টন করে বিজেপি। কাজেই তা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD