April 23, 2024, 8:23 am

নড়াইলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ

যমুনা নিউজ বিডিঃ নড়াইল জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটির পর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ও অভিভাবকদের নিয়ে সমাবেশ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের লিখিত এ নির্দেশনা দেন।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অফিস আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন আনা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও তারা গোপনে মোবাইল আনছে এবং ভালো-মন্দ, কোনও কিছু বিবেচনা না করে বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত পোস্ট, লাইক এবং শেয়ার নিয়ে বিব্রতকর ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মির্জাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী এ ধরনের একটি করে পোস্ট নিয়ে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ফলে প্রতিষ্ঠান দুটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এমতাবস্থায়, সুধী সমাজের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ করা হলো।

নির্দেশনা

১) মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজ ও মাদরাসার দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন আনতে পারবে না।

২) মোবাইল না আনার নির্দেশনাটি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের তৎপর থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ চেক করা যেতে পারে।

৩) কোনও শিক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তা জব্দ করাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪) মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ঈদের ছুটির পর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করতে হবে।

সম্প্রতি নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় ভারতের বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতা নূপুর সাহাকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে। ঘটনার সময় দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও কর্মকর্তাদের সামনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর গলায় জুতার মালা পরিয়ে কলেজ থেকে বের করা হয়।

এদিকে জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী শনিবার (২ জুলাই) নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুবায়ের হোসেন চৌধুরী।

অপরদিকে নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত জেলা পুলিশের তদন্ত টিমের প্রতিবেদনও শনিবার নির্ধারণ করেছে।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে মো. আকতার হোসেনকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। তিনি মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তাকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD